মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রাক্কালে কারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, তা জানা নেই গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। এ নিয়ে গবেষণা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সোমবার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতি যখন তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে স্মরণ করছে, তখন জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন এই বুদ্ধিজীবী, যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য ফিল্ড হাসপাতাল খুলেছিলেন।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই হত্যাযজ্ঞ ঘটে, যার পেছনে ছিল আলবদর বাহিনী। জামায়াতে ইসলামের সে সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ এই বাহিনী গড়ে তুলেছিল।
আলবদরের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, মীর কাসেম আলী, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ফাঁসিতে ঝুলেছেন বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে। আরেক শীর্ষ নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের দণ্ড কার্যকর এখন সময়ের অপেক্ষা।
আলবদর বাহিনীর অপারেশন ইনচার্জ চৌধুরী মুঈনুদ্দীন আর ‘চিফ এক্সিকিউটর’ আশরাফুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড হলেও তারা দেশের বাইরে থাকায় তা কার্যকর করা যায়নি।
গত কয়েক বছরে বিএনপি ও জামায়াতের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠা জাফরুল্লাহর ধারণা, অন্য কেউ এই হত্যার পরিকল্পনা করতে পারে। তিনি বলেন, ‘১৪ তারিখ ঢাকাতে এই ঘটনা ঘটেছে। এই যে নেতাশূন্য করার পরিকল্পনা, এটা পাকিস্তানিরা করেছে না অন্য কেউ করেছে, যদি ঘটনাটা মেলান তবে বুঝতে পারবেন।
‘কারণ তারা কী করে জানত? অন্তত পক্ষে ভারত জানত এরকম একটা ম্যাসাকার হবে। তারা এটার সঙ্গে যুক্ত আছে কি না আমি জানি না। তবে এই ইতিহাসগুলো গবেষণার বিষয়।’
মুক্তিযুদ্ধে আহত সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের সঙ্গে তার একটি কথোপকথনের কথাও তুলে ধরেন জাফরুল্লাহ। বলেন, ‘অক্টোবর মাসে যে চুক্তি হয়েছিল, তাও আমি বলতে পারি। কারণ, আমি জড়িত না থাকলেও সরাসরি ইতিহাসের এই বিষয়গুলো দেখেছি।
‘খালেদ মোশাররফ আহত হয়েছিলেন, তখন আমি তার চিকিৎসা করতে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে বলেছেন, ওরা (ভারত) আমাদেরকে সিকিম বানাতে চায়। আপনি আমাকে বিলেতে নিয়ে চলুন। তখন আমি বলেছিলাম, আমি আপনাকে টিকিট দিতে পারি, কিন্তু আপনাকে এরা বের হতে দেবে? এ সব তথ্যগুলো কোথায়? তাই আমি মনে করি এসব বিষয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।’
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহীম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও এ সময় বক্তব্য রাখেন।