পদ্মা সেতুকে সত্যি সত্যি ভালো কাজ বলে প্রশংসা করেছেন সরকারের কট্টর সমালোচক সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। আর এই বক্তব্য যে সরকারের ‘দালালি’ না সেটাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সবগুলো স্প্যান বসানোর পর বহুল আলোচিত এই সেতুর পুরোটা দৃশ্যমান হওয়ার পর দিন শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক।
মান্না বলেন, ‘যত গালি দেন, উনি (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ করবেন না। আমি এ জন্য ঠিক করেছি, তাকে একটা প্রশংসা করি। এটা কোনো দালালি করছি না। সত্যি সত্যি আমি মনে করি, পদ্মা সেতু একটা ভালো কাজ হয়েছে।’
বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত পদ্মা সেতু। এমনকি এর তিন সাড়ে তিন গুণ গড় রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়েও এতটুকু আলোচনা নেই।
এই সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংকের এই সেতু থেকে সরে যাওয়া, পরে সরকারের নিজ অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা, কানাডার আদালতে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগকে গালগপ্প বলে উড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সেতুর প্রতিটি অগ্রগতি বড় খবর হয়েছে।
সেতু উদ্বোধনে আরও এক থেকে দেড় মাস সময় লাগবে জানানোর পরও এ কারণেই সেতুর শেষ স্প্যান বসানো নিয়ে দেশজুড়ে উচ্ছ্বাস আছে।
মান্না বলেন, ‘এটা একটা স্বপ্নের সেতু তো বটেই, অন্তত দক্ষিণাঞ্চলের জন্য তো বটেই।’
পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মান্না। বলেছেন বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে কেন টাকা নেয়নি সরকার
তবে সেতুর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মান্না। বলেন, ভারতের আসাম এবং অরুনাচলের মাঝামাঝি ৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ হয়েছে এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা। আর পদ্মা সেতুতে ব্যয় হবে ৬০ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা।
মান্না বলেন, সব শেষ সরকার বলেছিল ৩০ হাজার কোটি টাকার কথা। তার ধারণা, আরও ১০ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা যোগ হয়েছে। শেষ হতে হতে আরও ২০ হাজার কোটি টাকা লাগবে।
মান্না বলেন, ওরা যদি সোয়া ৯ কিলোমিটার সেতু ১১ শ ২৮ কোটি টাকা দিয়ে করতে পারে, এখানে এতো টাকা লাগবে কেন?’
নাগরিক ঐক্যের নেতা বলেন, ‘খুব ডাট মারায়। আমরা কাউকে কেয়ার করি না, নিজেদের টাকায় করেছি। কেন? আপনারা তো চীন থেকে লোন নিয়েছেন। ওই টাকার মধ্যে চীনা কোম্পানি নাই তারা করেছে না? তারা সুদ নিচ্ছে না? সুদের হার কত? মিনিমাম ৪%।’
বিশ্বব্যাংকের ঋণ কেন নেয়া হয়নি, সে প্রশ্নও রাখেন মান্না। বলেন, বিশ্বব্যাংক থেকে টাকা নিলে সুদের হার হাতো শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ।
নাগরিক ঐক্যের নেতার দাবি, বিশ্বব্যাংক টাকা দিলে তারা তদারকি করত বলে দুর্নীতির করার সুযোগ থাকত না।
তিনি বলেন, ‘এখন এই যে ৬০/৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সেতুটা হচ্ছে এই সম্পর্কে কোনো হিসাব চাইতে পারব? চাইলে সরকার দেবে?’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ইশরাক হোসেন, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর প্রমূখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।