আংশিক কমিটি ঘোষণার সাত বছর পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেয়েছে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদল। এতে গাজী সিরাজ উল্লাহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বেলায়েত হোসেন বুলু।
দীর্ঘ সময় পর কমিটি পেয়েও বিতর্কে ঘুরপাক খাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল। প্রশ্ন উঠেছে দুই শীর্ষ নেতার বয়স নিয়ে। সভাপতি গাজী সিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন নিজেরাই জানিয়েছেন তাদের বয়স চল্লিশের কোঠা পেরিয়েছে। এরমধ্যে সভাপতির বর্তমান বয়স ৪২ ও সাধারণ সম্পাদকের ৪৫ বছর বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম নগরের ছাত্রদলের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সী শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হয়ে তারা রেকর্ড করেছেন। ছাত্রদলের এই কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
গত ৩০ নভেম্বর ঘোষিত নগর ছাত্রদলের বিশাল এ কমিটিতে ৪৯ জন সহসভাপতি, ৮০ জন যুগ্ম সম্পাদক, ৪৮ জন সহসাধারণ সম্পাদক ও ২৮ জন সহসাংগঠনিক সম্পাদকসহ ২৭২ সদস্যের এ কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিতে ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, প্রবাসীসহ মাদক মামলার আসামিরাও স্থান পেয়েছে। কমিটিতে অছাত্র ১৮০ জন, বিবাহিত ৮০ জন ও ১২ জন প্রবাসী রয়েছেন। এ নিয়ে তৃণমূলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক জন নেতা একাধিক পদে থাকতে পারবেন না। দেশের নাগরিক ও ছাত্র-ছাত্রীরাই ছাত্রদলের সদস্যের জন্য যোগ্য হবেন। কিন্তু ঘোষিত এ কমিটির অনেক নেতার তিন থেকে চারটি পদ রয়েছে।
এর মধ্যে গাজী মুহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এবং বেলায়েত হোসেন বুলু নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হয়েছেন।
গাজী মুহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে আমি কমিটিতে থাকতে চাইনি। কেন্দ্র থেকে অনুরোধ করেছে তাই কমিটিতে থেকেছি। আমি এখন বিএনপির রাজনীতি করি।’
সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন আমার বয়স ৪৫। আমি নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক। সাত বছর আগে ছাত্রদলের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলাম। এখন আমি ছাত্রদলের রাজনীতি করি না। গত পাঁচ বছর ধরে কোনো কর্মসূচিতে যাইনি। কেন্দ্রের অনুরোধে কাগজ কলমে সেক্রেটারি আছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিরাজ ভাই ও বুলু ভাইয়ের বয়স হয়ে গেছে সেটি আমরা জানি। এ জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের নাম রাখিনি। তারা কাগজে কলমে সভাপতি-সেক্রেটারি। মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের জেল-জুলুমের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের জন্য আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি দিয়েছি। এই কমিটি শিগগির বিলুপ্তি ঘোষণা করে নতুনভাবে ছাত্রদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হবে।’
২০১৩ সালের ২১ জুলাই গাজী মুহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ সভাপতি ও বেলায়েত হোসেন বুলুকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর ছাত্রদলের ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।