মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি ঘরে বসে কোনো আন্দোলন কিংবা যুদ্ধ করেননি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।
শেখ মনির ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার নগর ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শেখ মনির পুনঃপ্রকাশিত দুটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আমু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শেখ ফজলুল হক মনি সরাসরি রণাঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ঘরে বসে কোনো আন্দোলন কিংবা যুদ্ধ করেননি।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমি ১৯৭৮ সালে জেলখানা থেকে বেরিয়ে বলেছিলাম, জাতি এবং আওয়ীমী লীগ হারিয়েছে জাতির পিতাকে। কিন্তু যুবলীগ হারিয়েছে জাতির পিতা ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতাকে। তাই যুবলীগের ক্ষতি বেশি হয়েছে।’
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যুবকদের সংগঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যুবলীগ গঠন করেন তার ভাগ্নে শেখ মনি। ১৯৭৪ সালে যুবলীগের প্রথম কংগ্রেসে তিনিই চেয়ারম্যান হন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ মনির ছোট ছেলে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
শেখ মনির রাজনীতির মাঠে আসার পেছনের গল্প শুনিয়ে তার ছেলে বলেন, ‘বাবা যখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তখন বঙ্গবন্ধু আমার দাদিকে বললেন, মনিকে আমাকে দাও।
‘দাদি বললেন, তোমার (বঙ্গবন্ধু) জন্যই তো আমরা সবাই বিচলিত থাকি। তুমি এখন মনিকে নিতে চাচ্ছো? তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার তো কেউ ছিল না। আমার মনির তো আমি আছি। এই বলে বঙ্গবন্ধু বাবাকে তার সান্নিধ্যে নিয়েছিলেন। সেই থেকে বাবার রাজনীতির শুরু।’
তাপস বলেন, ‘ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াসের মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগ্রামকে বেগবান করার জন্য যে নির্দেশনা জাতির পিতা দিয়েছিলেন, তার অন্যতম কর্ণধার ছিলেন শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি।’
শেখ মনির অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির চর্চার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে যে ধর্মহীনতা নয়, তা সেই ৭৩-৭৪ সালেই শেখ মনি তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন। বলেছিলেন, সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীরা যদি ধর্মনিরপেক্ষতা নস্যাৎ করতে পারে তবে তারা এই বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি।
আরও বক্তব্য দেন চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুল, ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নার্গিস রহমান।
স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।