রাজধানীতে জুমার নামাজের পর ভাস্কর্যবিরোধী মিছিল করার চেষ্টা লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।
মিছিলকারীরা কওমিমাদ্রাসাকেন্দ্রীক দলের কর্মী হলেও তারা কোনো দল বা সংগঠনের ব্যানার বহন করছিল না। আর নেতা স্থানীয় বা পরিচিত মুখ কেউ মিছিলে আসেননি।
শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে জুমার নামাজের পর কয়েকশ মানুষ মিছিল করার চেষ্টা করে। তারা স্লোগান দিয়ে শাহবাগের দিতে আগানোর চেষ্টা করে।
মসজিদের সামনে আগে থেকেই কড়া পাহারায় ছিল কয়েকশ পুলিশ সদস্য। মিছিল বের করা মাত্র দুই বার ধাওয়া দেয় তারা। আর মিছিলকারীরা কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়ে যায় ছত্রভঙ্গ।
জুমার নামাজ শেষ করে প্রথমে মসজিদের সিঁড়িতে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকে কর্মীরা।
এ সময় এক জন ‘শেখ হাসিনার আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান তুললেও তাকে থামিয়ে দেয়া হয়।
পরে তারা ‘নাস্তিকদের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’- স্লোগান দিতে থাকে।
বেলা দুইটার দিকে তারা মিছিল নিয়ে বেশ উত্তেজিত ভঙ্গিতে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে তাদের ধাওয়া দেয় পুলিশ। তখন কর্মীরা আবার মসজিদের দিকে চলে যায়।
এরপর সেখানে আবার কিছুক্ষণ স্লোগান চলে। মিনিট দশেক পরে পুলিশই তাদেরকে বের হওয়ার সুযোগ দেয়। বলে, মিছিল না করে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে।
তারা মসজিদ থেকে বের হয়ে স্লোগান দিতে থাকলে পুলিশ দেয় ধাওয়া। পরে করে লাঠিপেটা। দৌড়ে তারা পল্টন মোড় পর্যন্ত আসার পর পুরোপুরি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল অঞ্চলের উপকমিশনার এনামুল হক সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে আমরা আগে থেকে অ্যালার্ট ছিলাম। হঠাৎ করে মুসল্লিরা মিছিল নিয়ে বের হতে চায়। তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমরা পল্টনে ব্যরিকেড দিয়েছিলাম। তারা সেটা ভেঙে ফেলে। আমরা তাদের শুধু ছত্রভঙ্গ করে দেই।’
গত বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মিছিল সমাবেশ করতে অনুমতি নেয়ার বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বলা হয়, বিনা অনুমতিতে মিছিল সমাবেশ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্ষ নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ধর্মভিত্তিক বেশ কয়েকটি দল নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ ও সমমনারা মাঠে নামার পর বিরোধিতা অনেকটাই স্থিমিত হয়ে এসেছে। আর চট্টগ্রামে ছাত্র ও যুবলীগ নেতাদের প্রতিরোধের মুখে হেফাজত নেতা মামুনুল হক সেখানে একটি মাহফিলে যোগ দিতে না পারার পর ধর্মভিত্তিক দলগুলো কথা বলছে নরম সুরে।
এর মধ্যে আবার ক্ষমতাসীন ১৪ দলের নেতারা সরকারের কাছে ওয়াজের আয়ের হিসাব নেয়ার দাবি জানিয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েও ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে উদ্বেগ আছে।
পাশাপাশি কওমি মাদ্রাসায় ছেলে শিশু ধর্ষণের প্রসঙ্গও উঠে আসছে। ক্ষমতাসীন দল ও বিভিন্ন সংগঠন ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে বলাৎকার নিয়ে কথা বলার আহ্বান জানাচ্ছে। তবে এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ধর্মীয় দলগুলোর নেতারা।