প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুগ্রহে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির মধ্যে এ নিয়ে কোনো কৃতজ্ঞতা বোধ নেই।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়াকে অন্যায় বলে বিএনপির পক্ষ থেকে আসা বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক।
বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাভারের আশুলিয়ায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চার লেনের দ্বিতীয় নয়ারহাট সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদা জিয়ার। বিএনপি তখন থেকেই ন্যায়বিচার না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছিল। উচ্চ আদালতে গিয়ে নেত্রীকে মুক্ত করার ঘোষণাও ছিল তাদের।
তবে তা সফল হয়নি, উল্টো সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। এর মধ্যে আবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা হয় ১৭ বছর।
আইনি লড়াই আর আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার ঘোষণা ব্যর্থ হওয়ার পর উদ্যোগী হয় বিএনপি নেত্রীর পরিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তারা নিয়ে যান আবেদন। এরপর বিশেষ বিবেচনায় গত ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয় বিএনপি নেত্রীকে। পরে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার অনুগ্রহেই খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত হলেও বিএনপি এমন একটি দল, যাদের কোনো কৃতজ্ঞতাবোধ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি, সাজাও দেয়নি। মামলা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর সাজা দিয়েছে আদালত।’
বিএনপি দলগতভাবে সন্ত্রাস পোষণের নীতি অনুসরণ করছে অভিযোগ করে সড়ক মন্ত্রী বলেন, ‘দলবদ্ধভাবে হত্যা আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে তারা বিশ্বাসী। এটাই তাদের রাজনীতির ঐতিহ্য।’
২৩ নভেম্বর ঢাকা-১২ আসনের উপনির্বাচনের দিন রাজধানীতে বাস পোড়ানোর ঘটনায় তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকার অন্যায়ভাবে মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর জবাবে কাদের বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করবে, জনগণের সম্পদ-শান্তি নষ্ট করবে, বাসে আগুন দেবে, নিজেরা নিজেরা মারামারি করবে। আবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া যাবে না, এমন মামাবাড়ির আবদার তারা করছে।’
ভিডিও কনফারেন্সে সাভারের আশুলিয়ায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চার লেনের দ্বিতীয় নয়ারহাট সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী।
কাদের বলেন, ‘আমরা তো দলীয় নেতাকর্মী এমনকি জনপ্রতিনিধিদেরও ছাড় দিচ্ছি না। অপরাধ করলে পক্ষ নিচ্ছি না, প্রশ্রয় দিচ্ছি না। অথচ বিএনপি অনুসরণ করছে সন্ত্রাস পোষণের নীতি। এটাই তাদের রাজনীতির ঐতিহ্য।’
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি ‘সুবিধাবাদ জিন্দাবাদে’ বিশ্বাস করে বলেই দুর্নীতিবাজদের দলে প্রশ্রয় দেয়। তারা সরকারের কোনো ভালো কাজের প্রশংসা না করে উল্টো অন্ধ সমালোচনা করে।
‘বিএনপি ভেবেছিল মানুষ না খেয়ে, চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় মরে থাকবে, কিন্তু শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে সেই পরিস্থিতি হয়নি বলেই বিএনপি নেতাদের মনে কষ্ট ও জ্বালা ধরেছে’-বলেন কাদের।
১৯৩.৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১৯.৪০ মিটার প্রশস্ত দ্বিতীয় নয়ারহাট সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৫.৭৩ কোটি টাকা। সরকারি অর্থায়নে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে।