বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকে অহেতুক বলেছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ নিয়ে অকারণে আওয়াজ না তুলে ধর্মীয় নেতাদেরকে আরও মানবিক পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতার দাবি, এই বিষয়টি নিয়ে আলেমদের ভুল পথে চালিত করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করছে ধর্মভিত্তিক বেশ কয়েকটি দল। প্রথমে এই ইস্যুতে মাঠে নামে চরমোনাইয়ের পীরের দল ইসলামী আন্দোলন। তারা হুমকি দেয় ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়া হবে। যদিও এখন এই ইস্যুতে এখন চুপ আছেন নেতারা।
তবে এরপর বিরোধিতায় নামে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনের আমির জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তারা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবেন।
সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক হুমকি দিয়েছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তিনি দেশে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি আবার তৈরি করবেন।
অবশ্য এই বক্তব্য দিয়ে প্রতিরোধের মুখে পড়া মামুনুল সংবাদ সম্মেলনে এসে সুর নরম করেছেন। বলেছেন, ভুল তথ্য প্রচার করে তাকে প্রশাসনের মুখোমুখি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি ভাস্কর্যের বিরোধী হলেও এ নিয়ে কোনো ‘যুদ্ধে যাবেন না’।
ধর্মভিত্তিক দলের নেতাদের উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘অকারণে আওয়াজ তুলবেন না। ভাস্কর্য-মূর্তি একটি অহেতুক বিতর্ক।’
তিনি বলেন, ‘আলেমগণ, আপনারা আমাদের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। আপনাদের দায়িত্ব হবে মানবিক। অহেতুক বিতর্ক করে ইসলামকে ছোট করবেন না।’
গোয়েন্দারা আলেমদেরকে ভুল পথে পরিচালিত করছে অভিযোগ করে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘গোয়েন্দাদের দ্বারা প্রভাবিত হবেন না৷ তারাই আসলে মিসগাইড করছে।’
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছিলেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা। ধর্ষণ-শিশু নির্যাতন ও ‘বিচারহীনতার’ এই কর্মসূচির আয়োজন করে সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম নামে একটি সংগঠন।
আলেমদেরকে নিয়ে কটূ কথা না বলারও আহ্বান জানান জাফরুল্লাহ। সরকারকে তিনি বলেন, ‘তাদেরকে কথা বলতে দেন। আমাদের দরকার ভালোভাবে বেঁচে থাকা।
‘আপনি আপনার উন্নয়নের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন তারা যেন ফুটপাত থেকে, রিকশাচালক ও দিনমজুর এর কাছ থেকে ঘুষ না খায়। তাতে অনেক লাভবান হবেন।’
সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এই যে এতো পরিশ্রম, এতো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সেগুলোর মূল্যায়ন করতে হলে আপনারা একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দিন। তাতে জনগণ ঠিক করবে আপনাদের কর্মকাণ্ডে তারা কতটা সন্তুষ্ট।’
বিএনপিকে রাজপথে নামার আহ্বানও জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বাবু সুরঞ্জন ঘোষের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন অকার্যকর হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন, কৃষক দল নেতা কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।