বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামুনুলের নরম সুর

  •    
  • ২৯ নভেম্বর, ২০২০ ২০:২৭

‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া বা এ ধরনের কোনো বক্তব্য দিইনি। আমি বলেছি, আদর্শিক জায়গা থেকে কোনো ভাস্কর্য রাখা হবে না। ...আবারও স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়।’

ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে উস্কে দেয়া হচ্ছে দাবি করে হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক বলেছেন, তিনি কোনোভাবে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নন।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ হলে আরেকটি শাপলা চত্বর তৈরির হুমকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিরোধের মুখে পড়া হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব রোববার সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

মামুনুল কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল খেলাফতে মজলিসেরও নেতা। আর দলীয় কার্যালয়ে হয় এই সংবাদ সম্মেলন।

লিখিত বক্তব্যে মামুনুল বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে কিছু ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আমার বিভিন্ন প্রোগ্রামে বাধা দেয়া হচ্ছে। সরকারদলীয় কিছু সংগঠন আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সংবাদ ও যোগাযোগ মাধ্যমে আমার নামে বিভ্রান্তিকর কিছু তথ্য প্রচার করছে। এহেন পরিস্থিতিতে জাতির সামনে আমার রাজনৈতিক ও আদর্শিক অবস্থানসহ নিজের বক্তব্য তুলে ধরা জরুরি মনে করছি।’

তিনি বলেন, ‘ভুল তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসনকে আমার বিরুদ্ধে উস্কে দেয়া হচ্ছে। আমি আশা করি এই অনভিপ্রেত অপতৎপরতা বন্ধ হবে।’

কোনটা ভুল তথ্য-জানতে চাইলে হেফাজত নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া বা এ ধরনের কোনো বক্তব্য দিইনি। আমি বলেছি, আদর্শিক জায়গা থেকে কোনো ভাস্কর্য রাখা হবে না।’

তবে আবার তিনি বলেন, ভাস্কর্য স্থাপনের চেষ্টা করা হলে সামর্থ্যের মধ্যে এর বিরুদ্ধে তিনি বলেই যাবেন। তবে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধে জড়াবেন না। এমন কোনো পদক্ষেপ নেবেন না যেটা হঠকারী হয় বা জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে।

মামুনুল তার পারিবারিক পরিচয় তুলে ধরে বলেন, তার বাবা শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক বিএনপি-জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের ইসলামের সঙ্গে চারদলীয় জোটে গেলেও পরে সে জোট ত্যাগ করেন। আর ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি করেন।

অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জোটবদ্ধভাবে রাজনীতিতে ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে তাদের সংগঠন খেলাফত মজলিস ও ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক জোটে যুক্ত না থাকার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্র অথবা গোপন আঁতাতের মাধ্যমে দেশ রাষ্ট্র কিংবা সরকারবিরোধী কোনো কর্মসূচি আমাদের নেই।’

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজ দল খেলাফতে মজলিসের কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলামীর যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের সংবাদ সম্মেলন 

 

হেফাজত নেতা বলেন, ‘আসলে একটি মহল ভাস্কর্য নির্মাণের এই বিরোধিতাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য দ্ব্যর্থহীন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন মরহুম মুসলিম নেতা হিসেবে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’

‘কখনও কোনোভাবে এমন একজন প্রয়াত মরহুম জাতীয় নেতার বিরুদ্ধচারণ করি না এবং করাকে সমীচিনও মনে করি না।’

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি বাক্য দুইবার উচ্চারণ করেন মামুনুল হক। বলেন, ‘আবারও স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন স্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান থাকা সত্ত্বেও লক্ষ্য করছি একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমি ব্যক্তি মামুনুল হককে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আর এ জন্য জামায়াত শিবিরের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে অমূলক ও অযৌক্তিক অভিযোগ আমার ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। আমি এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে হেফাজত নেতা বলেন, ‘ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের ইস্যু নিয়ে কিছুদিন ধরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শান্তিপ্রিয় ইসলামপ্রেমী তৌহিদী জনতা। স্বাভাবিকভাবে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ কিংবা প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ অনৈসলামিক সংস্কৃতি হওয়ায় আলেম সমাজ এর প্রতিবাদ করেছে। সেই সূত্রে আমিও ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে আমার বক্তব্য তুলে ধরেছি।’

ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে এই অবস্থান এখনও আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন থেকে ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলছি, তখন থেকে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, ভাস্কর্য যারই হোক, জিয়াউর রহমানের হোক অথবা অন্য যারই হোক, আমি ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে। সব ভাস্কর্য অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছি।

‘আমাদের আইনগতভাবে, নৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সামর্থ্য থাকলে জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্যসহ সব ভাস্কর্যই আমরা মুসলমানদের জনপদ থেকে অপসারণ করার উদ্যোগ নেব।’

এ বিভাগের আরো খবর