বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তাদের একচুল ছাড় নয়: সরকারকে জাসদ

  •    
  • ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ২১:৪৫

হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতার বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্য স্থানান্তরিত করার মধ্য দিয়ে ধর্ম ব্যবসায়ীদের আশকারা দেওয়ার ফলেই আজ এই অপশক্তি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করার দুঃসাহস দেখাতে পারছে।’

ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দল বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ ঠেকাতে যে কর্মসূচি পালন করেছে তা সরকারের নমনীয়তার ফল বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ। দলটি মনে করে, দলগুলো যে দুঃসাহস দেখিয়েছে তা কঠোর হাতে দমন করা উচিত।

শনিবার এক বিবৃতিতে এই কথা বলেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।

ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদে শুক্রবার রাজধানীর ধোলাইপাড়ে সমাবেশ করে ধর্মভিত্তিক ইসলামী আন্দোলন। ভাস্কর্যকে মূর্তি আখ্যা দিয়ে এর বিরোধিতা করছে ধর্মভিত্তিক দল খেলাফত মজলিসও।

সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

ধর্মভিত্তিক দলগুলো এর আগে দুই বার ভাস্কর্য নিয়ে আন্দোলন করেছে। আন্দোলনের মুখে বিমানবন্দরের সামনের সড়কে লালনের ভাস্কর্য নির্মাণ বাতিল হয়েছে।

ইসলামী দলগুলোর আন্দোলনের মুখে সুপ্রিম কোর্টের সামনের এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়া হয়।

 

২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকা অবরোধ ও শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়ার দিন ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম যে ১৩ দফা দিয়েছিল, তার একটি ছিল সব ভাস্কর্য ভেঙে ফেলতে হবে।

পরে সুপ্রিম কোর্টের সামনে সামনে থেকে জাস্টিস লেডির ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়া হয় হেফাজতের আন্দোলনের কারণে।

তবে ধর্মভিত্তিক দলগুলো কখনও বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেনি, যেটা এবার করছে।

হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতার বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্য স্থানান্তরিত করার মধ্য দিয়ে ধর্ম ব্যবসায়ীদের আশকারা দেওয়ার ফলেই আজ এই অপশক্তি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করার দুঃসাহস দেখাতে পারছে।’

এই গোষ্ঠীকে ‘এক চুল’ ছাড় না দিয়ে ‘সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী ভাস্কর্য বিরোধীদের’ কঠোরভাবে দমন করার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইনু ও শিরীন। এই ‘অপশক্তির’ বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান তারা।

ভাস্কর্য ইসলামবিরোধী বলে ইসলামী দলগুলোর পক্ষ থেকে আসা বক্তব্যও খণ্ডন করেছে জাসদ। দলের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ইয়েমেন, পাকিস্তানসহ সকল মুসলিম দেশেই তাদের দেশ ও জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য ধারণ করে বহু ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে অবস্থান আসলে বাংলাদেশ ও বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিরুদ্ধেই অবস্থান।’

জাসদ নেতারা বলেন, ‘পাকিস্তানপন্থী স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ধর্মভিত্তিক দল ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের আসল টার্গেট হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা।’

৭৫-এর পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার যে রাজনীতি শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা সেই রাজনীতিরই অংশ বলেও মনে করেন দুই জন।

ভাস্কর্য কোন পর্যায়ে

ধোলাইপাড় মোড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে ভাস্কর্য স্থাপনের কাজ চলছে সেটির কাঠামো এখনও দৃশ্যমান হয়নি।

ভাস্কর্যটির নির্ধারিত স্থানে উঁচু করে টিন ও কালো পলিথিন দিয়ে ঘেরা রয়েছে। বাইরে থেকে দেখা যায়, যে বেদীতে ভাস্কর্যটা স্থাপন হবে, সে বেদীর কাজটা কেবল শেষ হয়েছে। ভাস্কর্যটা যে বেশ বড় আকারের হচ্ছে, সেটি বেদী দেখেই বোঝা যায়।

এই বেদীতেই নির্মিত হবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

 

এই ভাস্কর্য প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৭ ইসিবি এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে সেনাবাহিনী ২৪ ইসিবি। ।

এই ভাস্কর্যটির নকশা ও নির্মাণ কাজ করছে বার্জার ডিজিটাল।

কাজের বিষয়ে বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির একজন ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি না করে ভাস্কর্য চত্বরের চারপাশে ঘিরে দেয়া ও পাইপ দিয়ে নকশার কাজের দায়িত্ব ছিল আমাদের। সেই কাজ আমরা শেষ করেছি।

তবে নির্মাণের দায়িত্বে সেনাবাহিনীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের কোনো কর্মকর্তা শনিবার নির্মাণ স্থলে ছিলেন না।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের জায়গাটি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা

 

স্থানীয়দের মধ্যে ভাস্কর্যটি নিয়ে উচ্ছ্বাস রয়েছে।

ধোলাইপাড়ের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘এখানে ভাস্কর্য হলে জায়গাটা দেখতে খুব সুন্দর লাগবে। অনেক দূর দুরান্ত থেকে লোকজন দেখতে আসবে, সেই সঙ্গে আমাদের ব্যবসাও ভালো হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর