যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী জো বাইডেনের দৃষ্টি আকর্ষণে ঢাকায় সরকার বাস পুড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এ কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর মুখমাত্র দৈনিক সংগ্রামের সাংবাদিক সম্পাদক আবুল আসাদ ও বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে এই আলোচনার আয়োজন করে সাংবাদিক ‘রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদ’।
মানবতাবিরোধী অপরাধী আবদুল কাদের মোল্লাকে শহীদ লেখার প্রতিক্রিয়ায় এক মুক্তিযোদ্ধার করা মামলায় দুই জন এখন কারাগারে।
ঢাকায় বাসে আগুন দেয়ার প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জো-বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অনেক রাষ্ট্র প্রধানকে ফোন দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে দেননি। তাই জো-বাইডেন এর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বাস পোড়ানো হয়েছে।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন জো বাইডেন। যদিও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পরাজয় স্বীকার করছেন না। তিনি আইনি লড়াইয়ের হুমকি দিয়েছেন।
আগের দিন ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে উপনির্বাচনে ভোট চলাকালে ঢাকায় ১০টি বাসে আগুন দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ এই ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছে। যদিও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ, ভোটে কারচুপি থেকে দৃষ্টি ফেরাতে আগুন দিয়েছে সরকার।
জামায়াতের মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রামের দুই সাংবাদিকের মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী
দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়েও কথা বলেন জাফরুল্লাহ। একে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে এর চাইতে খারাপ এবং দুর্ভাগ্যজনক কিছু হতে পারে না।’
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নেতারা একটা ভয়ানক অভিযোগ এনেছেন উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘তারা মনে করেছেন কয়েকজন আলেম এর মদদ যোগাচ্ছে।… আলেমদের নামে এধরনের অপবাদ দেয়াটা মোটেও ভালো দিক না।’
বিএনপিকে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামারও পরামর্শ দেন এই বুদ্ধিজীবী। বলেন, ‘সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করতে না পারলে সবচেয়ে বড় বিপদ হবে বিএনপির।… বিএনপিও আন্দোলন করে না, আমরাও আন্দোলন করি না।
‘যেখানে ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও সবাই জামিন পায়, সেখানে খালেদা জিয়ার জামিন হয় না, সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন হয় না, এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আর কী হতে পারে!’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; তিনি এত কিছু বোঝেন, কিন্তু ওনার বন্ধুদের চেনেন না, এটাই হচ্ছে জাতির দুর্ভাগ্য। একটা সরকারের সবচেয়ে বড় বন্ধু হচ্ছে সাংবাদিক, যারা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন।
‘প্রধানমন্ত্রী এখানেই তার জীবনের বড় ভুলটা করছেন। সাংবাদিকদের আপনি যত বেশি কথা বলতে দেবেন, আপনার গোয়েন্দাবাহিনীর চেয়েও আপনি বেশি তথ্য পাবেন। তাতে আপনি লাভবান হবেন।’
আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বানও জানান জাফরুল্লাহ। বলেন, ‘আপনারা তো সবকিছুই দেখছেন, চশমা ব্যবহার করলেও আপনারা তো অন্ধ না। তা না হলে দেশের সামনে সমূহ বিপদ ‘
অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন বলেন, ‘এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে একযোগে ৯ স্থানে বাসে আগুন দেয়া বিএনপির কাজ নয়। বিএনপির এ রকম সক্ষমতা নেই। থাকলে অনেক আগেই সরকারের পতন হয়ে যেত।’