বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগে ঢিমেতাল

  •    
  • ১ নভেম্বর, ২০২০ ০৯:৩৩

জেলায় আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই প্রায় এক বছর ধরে। মেয়াদ ফুরিয়েছে যুবলীগের খণ্ডিত কমিটির। ছাত্রলীগেরও কোনো কমিটি নেই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনা মহামারি।

একে তো পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই, তার ওপর করোনা মহামারির প্রকোপ। এ দুয়ের চাপে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের সংগঠনিক কার্যক্রম প্রায় থেমে আছে। জাতীয় কর্মসূচিগুলো পালনের মধ্যে সীমিত হয়ে পড়েছে সংগঠনের তৎপরতা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেছেন, করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসায় তিনি সংগঠন শক্তিশালী করা এবং কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার তাগিদ পেয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, শিগগিরই হবে আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি।

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, সহ-সভাপতি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, জাহিদ হোসেন জাফর, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার ঘোষ, ১ নং সদস্য কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী। ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে এ কমিটি গঠিত হয়।

ছয় জনের নাম ঘোষণা করা হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে মোট ৭৫ জনের কমিটি গঠন করে দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু আজও এ কমিটি গঠন করা হয়নি।

বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান স্বীকার করেন করোনার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর বেশি কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

তবে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, মহামারীর কারণে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সাংগঠনিক কাজ করতে পারছেন না। আগের কমিটির নেতা-কর্মী এবং নতুন যারা আসতে চান তাদের নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করছেন বলে দাবি করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের আগের সম্মেলনটি হয় ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর। সেই সম্মেলন থেকে ৭১ সদস্যের জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি কেন্দ্রে পাঠানো হলেও তা ২০১৬ সালের ২০ মার্চ অনুমোদন হয়। আর তার আগের সম্মেলন হয়েছিল ১০ বছর আগে।

শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু মার্কেটের চারতলায় জেলা আওয়ামী লীগের বিশাল কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল এর বাইরের কলাপসিপল গেট ছোট করে খোলা আছে। শিকল দিয়ে এমনভাবে তালা দেয়া, যেন একজন করে কোনোমতে ঢুকতে পারেন। কয়েকজন মহিলা নেতাকর্মীর আসা যাওয়া দেখা গেলেও হলরুমসহ বেশিরভাগ কক্ষই বন্ধ ছিল। 

যুবলীগ 

জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর। সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হন আগের কমিটির আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম। ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম স্বপন। তারা দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ১১ মাসের মাথায় ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দিলেও তা আজও অনুমোদন হয়নি। এদিকে কমিটির তিন বছরের মেয়াদও পূর্ণ হয়ে গেছে। 

জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, কমিটি কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে সব থমকে আছে। যে ১০১ জনের কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে, তাদের নিয়েই সাংগঠনিক কাজ চালানো হচ্ছে বলেন জানান তিনি।

এর আগে ২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল রবিউল ইসলামকে প্রধান করে ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছিল। তিন মাসের জন্য গঠিত এ কমিটি আড়াই বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে ব্যর্থ হয়। তার আগের সম্মেলন হয়েছে ১৯৯৭ সালের নভেম্বরে। তখন এ কে সিদ্দিককে সভাপতি ও মনিরুজ্জামান লালনকে সাধারণ সম্পাদক করে দ্বিবার্ষিক কমিটি করা হয়েছিল।

এর মধ্যে দুর্নীতি এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কুষ্টিয়া শহর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র থেকে এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুজ্জামান সুজন জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে জমি দখলের মামলায় গ্রেপ্তার হন। 

ছাত্রলীগ

কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগেরও বর্তমানে কমিটি নেই। গত ১৬ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সংসদ চিঠি দিয়ে আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়াকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর ইয়াসির আরাফাত তুষারকে সভাপতি এবং সাদ আহম্মেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ২২৩ সদস্যের কমিটিকে অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংসদ। দুই বছরের জন্য করা এ কমিটি ২৪ নভেম্বর ২০১৯ সালেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়।

সদ্যবিদায়ী জেলা সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার বলেন, ‘আমার ছাত্রত্ব শেষ, বয়সও নেই, কমিটিরও মেয়াদ শেষ, ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিয়েছি। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের যোগ দেব।’

ভবিষ্যতে নেতৃত্বে আসতে পারেন এমন আলোচনা আছে যাদের নিয়ে, তাদের একজন আব্দুল হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের একটি বড় দল নিয়ে করোনা রোগীদের সেবায় কাজ করছেন তিনি। তিনি বলেন, সাংগঠনিক কাজের জন্য কমিটি দরকার হলে ছাত্রলীগের হয়ে কাজ করতে হলে পদের প্রয়োজন হয় না।

জেলা ছাত্রলীগের আগের কমিটি অনুমোদন পেয়েছিল ২০১২ সালের ৫ অক্টোবর। সেই কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতা আলী মূর্তজা খসরু সভাপতি ও আব্দুল্লাহ আল মামুন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রথমে সাত সদস্যের কমিটি হলেও পরের বছর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন পায়।

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাংবাদিক নেতা রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, গণতান্ত্রিক নিয়মেই কুষ্টিয়ায় চলছে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম। যেসব কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে তা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।

কবে হবে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি? এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, যুবলীগ বা ছাত্রলীগের ব্যাপারে তাদের নেতারাই বলতে পারবেন। তবে আওয়ামী লীগের কমিটি শিগগিরই হবে বলে জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর