ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার মামলায় সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই নেতা গ্রেফতারের পর নুরুল হক নুর আশঙ্কা করছেন, তারও একই পরিণতি হতে পারে।
রোববার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার করে।
যে মামলায় এই দুই জনকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, সেই মামলার আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরও।
নুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাসার আশপাশে আগে থেকে প্রায়ই অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা দেখতাম। এখন আরও বেশি বেশি দেখছি। এতে আশঙ্কা হচ্ছে- আমাকেও তুলে নিতে পারে, গুম হয়ে যেতে পারি।’
গত ২০ সেপ্টেম্বর পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। নুরসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আনা হয় সহযোগিতার অভিযোগ।
ওই নারীর অভিযোগ, নুর তাকে মীমাংসার কথা বলে পরে তাকে হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, চুপ হয়ে না গেলে তাকে ‘পতিতা’ বলে অপপ্রচার চালাবেন।
পরে ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর একই আসামিদের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা করেন বাদী। আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেছেন তিনি।
এর ফেসবুক লাইভে এসে তার বিরুদ্ধে মামলা করা তরুণীকে ‘দুশ্চরিত্রা’ গালি দেন নুর।
ডাকসুর সাবেক ভিপি অভিযোগ করেন তাদের পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ মাহমুদ ও সংগঠনের কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকিকেও আটক করা হয়েছে।
অবশ্য পুলিশ জানিয়েছে, এদের কাউকে আটক করা হয়নি। তবে মামলার আসামি বাকি সবাইকে খোঁজা হচ্ছে।
নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও তুলে নেয়ার অভিযোগে সোমবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ করে পরিষদ। সেখানে নুর ছিলেন না।
এতে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আসে, গতকাল দুপুর আড়াইটায় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে তুলে নিয়ে যায়। বিষয়টি সে মেসেজ করে আমাদের জানিয়েছে।’
ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার মামলায় গ্রেফতার দুই জনের মুক্তির দাবিতে শাহবাগে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ। ছবি: সাইফুল ইসলাম
‘এরপর থেকে আমরা সংগঠনের কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকির কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। অন্যদিকে তেজগাঁও একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিল আসিফ মাহমুদ, তাকেও তুলে নিয়ে গেছে।‘
নুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা শাহবাগ ও লালবাগ থানায় খোঁজ নিয়েছি, ডিবি কার্যালয়েও গিয়েছি। বরাবরের মতো এবারও তারা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।’
‘ডিবি কার্যালয়ে নিখোঁজদের আত্মীয়রা যোগাযোগ করলেও তাদের আটক বা গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্বীকার করা হয়নি।’
সমাবেশ শেষে মিছিল করে মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব, পল্টন হয়ে গুলিস্তানের দিকে যায় বিক্ষোভকারীরা।