অপরাধীদের গ্রেপ্তার, বিচার বিভাগীয় তদন্ত, আহতদের উন্নত চিকিৎসা, শতভাগ আবাসন ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবির।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে প্রশাসনিক ভবন, শহীদ মিনার হয়ে কাটা পাহাড় রোড দিয়ে জিরো পয়েন্টে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয় বিক্ষোভ কর্মসূচি।
বিক্ষোভ মিছিলে সংগঠনটির নেতা কর্মীরা ‘এই মুহূর্তে দরকার, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার’, ‘বিচার নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, লাল সন্ত্রাসের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘মববাদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিব না’, ‘জুলাইয়ের প্রশাসন, দাও শতভাগ আবাসন’, ‘তোমার আমার অধিকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শাখা ছাত্রশিবিরের বায়তুল মাল সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলী, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর (দক্ষিণ) সভাপতি
ইব্রাহিম হোসেন রনি, শাখা সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ, প্রচার সম্পাদক মো. ইসহাক ভূঁঞা, শিক্ষা সম্পাদক মোনায়েম শরীফ।
এসময়, দাবিগুলো বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হলে প্রশাসনকে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।
শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, ‘আমরা এখানে পড়াশোনা করতে এসেছি, সন্ত্রাসীদের সাথে যুদ্ধ করতে আসিনি। বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের নীরবতার কারণে কিছুদিন পরপর আমাদের সন্ত্রাসীদের সাথে মুখোমুখি হতে হয়।’
প্রশাসনকে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনাদের শান্তি মতো পদত্যাগও করতে দেব না। হুঁশিয়ার হয়ে যান। শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক খেলেছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি উল্লেখযোগ্য কার্যকর পদক্ষেপ না নেন, তাহলে আপনারা এখন যা ভাবছেন, তার চেয়েও পরিণতি ভয়াবহ হবে।’
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন,‘প্রশাসন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ৩০ ও ৩১ আগস্টের ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ঘটনার সূত্রপাত থেকে শেষ পর্যন্ত কারা উস্কানি দিয়েছে, কারা নির্দেশদাতা, সন্ত্রাসীরা কাদের প্রশ্রয়ে এখনও গ্রেফতারের বাইরে তা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে উন্মোচিত করে যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জুলাইয়ের এই প্রশাসন আমাদের আবাসনের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যার ফলে উচ্চ মূল্য দিয়ে কটেজে অবস্থান করতে হয়। আবাসন, নিরাপত্তা, বিচার বিভাগীয় তদন্ত, আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।’
ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর (দক্ষিণ) সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো সকল শিক্ষার্থীদের দাবি। সংঘর্ষের ঘটনাকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। এই প্রশাসনকে মুখ বন্ধ রাখলে হবে না। সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যদি গ্রেপ্তার করতে না পারেন, ভিসি মহোদয় আপনাকে অতিদ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। প্রোভিসি আপনি মনে করিয়েন না বোবার কোনো শত্রু নেই, মুখ বন্ধ রাখলে হবে না। যদি আপনি নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন, আপনাকেও পদত্যাগ করতে হবে। প্রক্টর মহোদয়, আপনাকে বলছি, আপনাকেও দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। একইসঙ্গে নিরাপত্তা দপ্তরের সদস্যদের পদত্যাগ করতে হবে। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’
একই সাথে দাবিগুলো বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হলে প্রশাসনকে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন ছাত্রশিবির নেতারা।