রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরু পাগলের দরবারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। পাশাপাশি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সিদ্দিকুর রহমান। সোমবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট দরবারে প্রবেশ করে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ শুরু করার কিছুক্ষণ পর দরবার শরীফ পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা ঘুরে দেখেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সিদ্দিকুর রহমান। এ সময় রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি উল্লেখ করেন, এ ঘটনার যদি প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। তবে কোনো নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি বা গণগ্রেপ্তারও করা হবে না।
এদিকে গোয়ালন্দের নুরু পাগলার কবর নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলো- গোয়ালন্দ পৌরসভার আদর্শ গ্রামের ছালামের ছেলে বিল্লু, মাল্লাপর্ট্রি শাকের ফকিরপাড়ার হেলাল উদ্দিনের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম শুভ, নতুনপাড়া (মাল্লা পর্ট্রি) মো. শওকত সরদারের ছেলে মো. জীবন সরদার, ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ডিগ্রিরচর বারখাদা গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন সরদারের ছেলে মোহাম্মদ ফেরদৌস সরদার।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ে ৩ হাজার ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
গত শুক্রবার জুম্মাবাদ গোয়ালন্দ উপজেলা আনসার ক্লাব চত্বরে জনতা একত্র হয়। পরে নুরু পাগলের আস্তানায় হামলা করে। এ সময় তারা পুলিশের দুটি গাড়ি, ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করে। আগুন ধরিয়ে দেয় মাজারে। এ সময় নুরু পাগলের অনুসারী ও উত্তেজিত জনতার ইট, পাথর নিক্ষেপে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। পরে উত্তেজিতরা কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পদ্মার মোড়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় নুরু পাগলের মরদেহ।
গত ২৩ আগস্ট নুরু পাগলের মৃত্যু পর তার পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে তার নিজ বাড়ির সামনের অংশে দুতলা সমান (প্রায় ১২ ফুট উঁচু) একটি কাঠামোর ভেতরে কবরস্থ করা হয়। পরে কবরটিকে কাবা শরীফের আদলে রং করা হয় এবং হজরত ইমাম মাহদী (আ.) দরবার শরীফ্; লেখা ব্যানার টাঙানো হয়। এটা স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, এ পর্যন্ত ১১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।