কুষ্টিয়ায় আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক সমাজ। পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের চরাঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা। এতে প্রায় ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির উঠতি ধান, পাট, ভুট্টা, সবজি, কলা ও মরিচের ফসল সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যার পানিতে প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাদের চোখের সামনে স্বপ্নের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ভবিষ্যৎ। বছরের অধিকাংশ খাদ্য চাহিদা পূরণে যে ধানের ওপর চরবাসী নির্ভর করেন, সেই ধান এখন পানির নিচে। বিশেষ করে ধানগাছ ডুবে যাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। চিলমারী ইউনিয়নের একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে আকস্মিক এই বন্যায় ধান, পাট, ভুট্টা, কলা, সবজি ও মরিচ সব ফসলই ব্যাপকভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি আগে কখনো দেখেননি বলেও জানান তারা। চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা কৃষকদের চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলেছে।’
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি প্রণোদনার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং সবধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।
এদিকে, কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল করিম জানান, এবারের বন্যায় জেলার মোট ১ হাজার ২৯৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির শিকার হয়েছে। যার মধ্যে দৌলতপুরেই ১ হাজার ১ হেক্টর। কৃষকদের সহায়তায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
বর্তমানে কুষ্টিয়ার বন্যাক্রান্ত কৃষকদের মুখে শুধু একটাই কথা ‘ফসল না উঠলে পরিবার চলবে কীভাবে?’ এ সংকটময় মুহূর্তে কৃষকদের টিকিয়ে রাখতে জরুরি হয়ে পড়েছে সরকারি সহায়তা, প্রণোদনা ও কৃষি ভর্তুকি।