বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজবাড়ীতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী ভারতে গ্রেপ্তার

  • জহুরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি   
  • ১০ আগস্ট, ২০২৫ ১৯:০২

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র রিপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী জামাল পত্তনদার ওরফে কুদ্দুস রহিম শেখকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। সে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দঘাট থানার উত্তর দৌলতদিয়ার ফেলু মোল্যা পাড়ার বাসিন্দা হোসেন পত্তনদারের ছেলে।

রবিবার (১০ই আগস্ট) টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাঞ্চের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (সিআইইউ) ৩৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ জামাল হোসেন পত্তনদার ওরফে কুদ্দুস রহিম শেখকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তাকে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের কামাঠিপুরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাজবাড়ী আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও তিনি সাজা এড়াতে পালিয়ে ভারতে চলে আসেন এবং তখন থেকেই পলাতক ছিলেন।

তদন্তে জানা গেছে, জামাল পত্তনদার ২০২৩ সাল থেকে ভারতে বসবাস করছিলেন এবং মিথ্যা ভারতীয় পরিচয় তৈরি করতে জাল কাগজপত্র ব্যবহার করছিলেন। তার কাছ থেকে একটি আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার একটি পাসবুক, আধার আপডেটের স্বীকৃতিপত্র এবং বাংলা ভাষায় লেখা আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার একটি ফটোকপি জব্দ করা হয়েছে। গুগল লেন্স ব্যবহার করে পরোয়ানাটির প্রাথমিক অনুবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এটি বাংলাদেশের একটি আদালত পত্তনদারের বিরুদ্ধেই জারি করেছিল।

জানাগেছে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইফুল ইসলাম রিপন হত্যা মামলায় জামাল পত্তনদার নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার উত্তর দৌলতদিয়া ( ফেলু মোল্যার পাড়া) হোসেন পত্তনদারের ছেলে। এ মামলায় ১২ আসামীকে খালাস দিয়েছে আদালত। রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামাল পত্তনদার অনুউপস্থিত ছিলো। গত ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টার সময় রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ মোছাঃ জাকিয়া পারভীন এ রায় প্রদান করেন।

মামলা সুত্রে জানাগেছে, দৌলতদিয়া বাজার ব্যবসায়ী পরিষদের সাবেক সভাপতি মোহন মণ্ডলের ছেলে ও ঢাকা সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র সাইফুল ইসলাম রিপন ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিকালে বাড়ীতে বেড়াতে আসে। রাতের খাবার শেষে সে তার বন্ধু ফরিদ শেখের সাথে রাত সোয়া ৮টার সময় বাসা থেকে বের হয়ে যায়। রাত পৌনে ৩টার দিকে সাইফুল ইসলাম রিপনকে প্রলোভন দিয়ে দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে নিয়ে কল্পনা বাড়ীওয়ালীর ২য় গেইটের সামনে গলির উপর আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বুকে, মাথায় ও থুতনিতে গুলি করে ঘটনাস্থলে হত্যা করে। তার বন্ধু ফরিদকে হত্যার উদ্দেশ্যে মুখের মধ্যে গুলি করলে তার ৭-৮টি দাঁত ও মাড়ি উড়ে যায় ও পায়ে গুলি করে। ফরিদকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম রিপনের মামা মোঃ খলিল বাদী হয়ে ৫জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮-১০জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ ১৩জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীর্ট দাখিল করেন।

এ মামলায় অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় গোয়ালন্দ উপজেলার উত্তর দৌলতদিয়া ( ফেলু মোল্যার পাড়া) হোসেন পত্তনদারের ছেলে জামাল পত্তনদারকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এ মামলায় অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া (খানকাহ শরীফ মসজিদ পাড়া) মৃত ওসমান সরদারের ছেলে মোঃ তমশের সরদার, উত্তর দৌলতদিয়া (মসজিদ পাড়া) আবু দাউদ বোপারী ওরফে দাদনের ছেলে মোঃ আশরাফ হোসেন, শাহ ব্যাপারী পাড়া গ্রামের মৃত সিদ্দিক শেখের ছেলে মোঃ ইয়াছিন শেখ, উত্তর দৌলতদিয়া (শামসু মাষ্টার পাড়া) হালিমের ছেলে শহিদ শেখ ওরফে সোহেল, উম্বারকাজী পাড়া ( উত্তর দৌলতদিয়া ৬নং ওয়ার্ডের) আইজাল প্রামানিক ওরফে আবজাল প্রামানিক ওরফে আজিজুল প্রামানিকের ছেলে আমজাদ প্রামানিক, উত্তর দৌলতদিয়া ( হোসেন মন্ডল পাড়া) ইসলাম প্রামানিকের ছেলে সুজন ওরফে জীবন প্রামানিক, পূর্ব উজানচর (সাহের মন্ডল পাড়া) আদেল উদ্দিন ওরফে আদুর ছেলে মোঃ শমসের আলী শেখ, দৌলতদিয়া হোসেন মন্ডল পাড়ার মোহন মন্ডলের ছেলে ইউসুফ, কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানার গোপ গ্রামের মোঃ আব্দুস সাত্তারের ছেলে হারুন-অর রশিদ হারুন, শমসেরপুর গ্রামের রোকন উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে রাকিব উদ্দিন বিশ্বাস, পাবনা জেলার সাথিয়া থানার ছাতুক বরাট গ্রামের মৃত আজিজ প্রামানিকের ছেলে বর্তমানে দৌলতদিয়া পতিতালয়ের লাল মিয়া কমান্ডারের বাড়ীর রাজা প্রামানিক, ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন থানার চরশালীপুর গ্রামের আঃ খালেকের ছেলে আসাদকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন ।

এ বিভাগের আরো খবর