বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদেশফেরত কৃষকের হাতে সৌদি খেজুরের সাফল্য

  • হাবিবুর রহমান শান্ত, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি   
  • ১৪ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৪৬

বাংলাদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো সৌদি আরবের খেজুর সফলভাবে উৎপাদন করে দেশজুড়ে আলোচনায় এসেছেন ভালুকা উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামের আবদুল মোতালেব। এলাকায় তিনি এখন ‘খেজুর মোতালেব’ নামেই পরিচিত। সৌদি খেজুরের বাগান থেকে তিনি বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় করছেন, যা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে দেশের নানা প্রান্তের চাষিদের।

মোতালেব জানান, ১৯৯৮ সালে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় সৌদি আরব পাড়ি জমান তিনি। সেখানেই খেজুর বাগানে কাজ করার সুযোগ পান। তিন বছর কাজ করার পর বুঝতে পারেন—অন্যের বাগানে মজুরের কাজ করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। ২০০১ সালের শেষ দিকে দেশে ফেরেন ৩৫ কেজি খেজুরের বীজ নিয়ে। নিজ বাড়ির উঠানে শুরু হয় তার খেজুর চাষের স্বপ্নযাত্রা।

শুরুর সময় ছিল দুঃখ-কষ্টে ভরা। বিদেশ থেকে টাকা বা স্বর্ণ না আনতে পারায় অভিমানে স্ত্রী চলে যান বাপের বাড়ি। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। তার আনা বীজ থেকে জন্ম নেয় ২৭৫টি গাছ, যার মধ্যে মাত্র সাতটি ছিল মাতৃগাছ। দীর্ঘ ১৮ বছরের গবেষণায় সেই মাতৃগাছগুলো থেকেই কাটিং করে চারা উৎপাদন শুরু করেন।

বর্তমানে তার সাত বিঘা বাগানে রয়েছে ৩ হাজারের বেশি সৌদি জাতের খেজুরগাছ। যার মধ্যে আজোয়া, শুক্কারি, আম্বার, লিপজেল ও মরিয়ম জাতের খেজুর অন্যতম। খেজুরের দাম জাতভেদে কেজি প্রতি ৬০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। শুধু খেজুর নয়, বিক্রি হয় চারা—কাটিং করা চারা ১৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা, আর বীজ থেকে উৎপাদিত চারা ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা।

মোতালেবের ছেলে মিজানুর রহমান অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২৩ সাল থেকে বাবার সাথে যুক্ত হয়ে খেজুর চাষে নতুন উদ্ভাবন করেছেন। দেশি ও সৌদি জাতের গাছ ক্রস করে এমন একটি জাত তৈরি করেছেন, যেটি থেকে প্রচুর রস পাওয়া সম্ভব। বাবা-ছেলে মিলে আট বিঘা জমিতে রস ও গুড় উৎপাদনের জন্য নতুন বাগান করেছেন।

মোতালেবের সাফল্যের খবরে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন তার বাগান দেখতে ও চারা কিনতে। অনেকেই তার অনুপ্রেরণায় শুরু করেছেন সৌদি খেজুর চাষ।

ভালুকা উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিচ্ছি। তবে সরকারিভাবে খেজুর প্রকল্প চালু হলে এ ধরনের উদ্যোক্তারা আরও বেশি উপকৃত হবেন।

আবদুল মোতালেবের স্বপ্ন, একদিন তার খেজুর শুধু বাংলাদেশে নয়, বিদেশেও রপ্তানি হবে। তবে এজন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন, যাতে সৌদি আরবের মতো প্যাকেটজাত করে খেজুর বাজারজাত করা যায়।

এ বিভাগের আরো খবর