জ্যৈষ্ঠ মাসের দশ দিন চলছে। এই সময়ে প্রকৃতিতে তাপমাত্রা যেমন থাকে তেমনি থাকে বৃষ্টিপাতও। বাংলা এই মাসের শুরুতেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে প্রকৃতিতে তাপমাত্রা কমেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা গণমাধ্যমকে বলেন, বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আর এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে আগামী আরও দশ দিন। বাংলাদেশ সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হওয়া গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার জন্য এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু মিয়ানমারের আকিয়াব উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এটি আরও অগ্রসর হওয়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আগামী ২৭ মে পশ্চিমমধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে সাগরে একটি নিম্নচাপ হতে পারে। এ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ও সৃষ্টি হতে পারে।
কাজী জেবুন্নেছা বলেন, ২৫ থেকে ২৬ মে সাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। সেটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নেবে কী না, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। এ নিয়ে নিশ্চিত করে এখনও কিছু বলার সময় আসেনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মে মাস সাধারণত ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে পরিচিত। গত বছরের মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় রিমাল সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। গত বছরের ২৬ মে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। এবারও নিম্নচাপ ও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সময় কাছাকাছি। এর আগেও একাধিক বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় এ মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে। তাই আবহাওয়াবিদরা এ সময় সতর্ক থাকতে বলছেন।
কাজী জেবুন্নেছা আরও বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার উপযোগী রয়েছে। তবে নিম্নচাপ তৈরি হলে সেটি কোথায় যাবে, কীভাবে শক্তি সঞ্চয় করবে, এসব বিষয় আরও কিছুদিন পর জানা যাবে।’এবার যদি ঘূর্ণিঝড় হয়, তবে এর নাম হবে ‘শক্তি’। নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।