বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংস্কারের যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করি না: জি এম কাদের

  • বিশেষ প্রতিবেদক   
  • ২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১৩:১৫

বর্তমান সরকারের দ্বারা সংস্কারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)। তিনি বলেন, সংস্কারের যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না। এই সংস্কার-পরবর্তী সংসদে পাস করতে হবে। সংস্কারের নাম করে নির্বাচন পেছানোর জন্য বাহানা করা হচ্ছে।

গতকাল শনিবার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির বর্ধিতসভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে একই সময়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আরেকটি বর্ধিতসভা করে রাজধানীর সেগুনবাগিচার জেকে টাওয়ারে। এতে সভাপতিত্ব করেন পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ। এই অংশটির কো-চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায়, সাবেক এমপি জাফর ইকবাল সিদ্দিক, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন জেলার নেতারা সভায় বক্তব্য দেন।

জি এম কাদের বর্ধিতসভায় আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাস করতে হবে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই। দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনো দিনই কার্যকর হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কত বড় গর্তে পড়বে, তা তারা বুঝতে পারছে না। সামনের দিকে মহাসংকট আসবে, পয়সা থাকবে না, বিদেশ থেকে মালামাল কিনতে হবে। আমাদের চাল পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই, ডিসেম্বরের কথা বলা হয়েছে, হতে পারে, আগে হলেও আপত্তি নেই। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেশের সমস্যা সমাধানের প্রধান ধাপ মন্তব্য করে তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন করে ফেলা দরকার। কেননা, এই সরকার ৬ মাস পরে আর দেশ চালাতে পারবে না। কারণ তাদের হাতে পয়সা থাকবে না।

তিনি বলেন, দেশে যেসব বিচার চলছে তাতে কেউ বাধা দিচ্ছে না, বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থরাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না।

জি এম কাদের বলেন, ‘এই সরকার বৈধ না, আবার অবৈধও না। কারণ আমরা মেনে নিয়েছি তাই মাঝামাঝি হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয় কিন্তু হাইকোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি।’

জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদের নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী ও সুবিধাভোগী। কিন্তু আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে।’

জি এম কাদের বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে তার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আন্তরিক সে বিষয়টির নিশ্চয়তা দিতে হবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে কি না! বর্তমান সরকার তার দলকে নিয়ে কী ভূমিকা নেবে, তা পরিষ্কার করা দরকার। একতরফা নির্বাচন সমস্যা সমাধান আনবে না। একতরফা নির্বাচন হলে আগের মতোই সমস্যা থেকে যাবে।

দেশের প্রতিটি বিভাগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বর্ধিতসভার প্রথম দিন গতকাল শনিবার রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল এবং সিলেটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক হয়। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ আজ রোববার বর্ধিতসভায় অংশ নেবেন ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ বিভাগের নেতারা। জাতীয় পার্টির সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। এরপর নির্বাচন কমিশনে একাধিক দফায় আবেদন করে সময় বাড়িয়েছে দলটি। এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর বর্ধিতসভার আয়োজন করা হয়।

সভায় সিনিয়র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, শেরিফা কাদের প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর