বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এমনকি আজ পর্যন্ত কারা জাতির সর্বনাশ করেছে জাতিসংঘ তার সুষ্ঠু তদন্ত করুক। আমরা সহযোগিতা করব। কারা জাতির সর্বনাশ করেছে আমরা দেখতে চাই।
সোমবার ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে জামায়াত জেলা শাখার আয়োজনে এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশটা বিভিন্ন ধর্মের মানুষের। কিন্তু যে দলটি (আওয়ামী লীগ) বিভিন্ন অংশে জাতিকে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু বলে বিভক্ত করে রেখেছিলো তারা ফায়দা লুটেছে।
‘দেশে যদি সংখ্যালঘু বলে কিছু থাকে তবে তাদের সর্বনাশ এ দলটিই করেছে। তাদের জায়গা জমি ও সম্পদ অবৈধভাবে লুট করা, বাড়িঘর ভাঙচুর করা, কাউকে কাউকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া- হায়েনার মতো এই কাজগুলো তারাই করেছে। তারা নিজেরা এসব করে দোষ ফেলেছে ইসলামপন্থীদের ওপর।’
তিনি বলেন, ‘যারা আল্লাহর ওপর ঈমান আনে তারা কোনো মানুষের ক্ষতি করে না, মানুষের প্রতি কখনও হিংসা পোষণ করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ২০১৩ সালে মানবাধিকার কমিশনে একটা চিঠি লিখেছিলাম। তাতে লিখেছিলাম- আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো দেয়া হয় আমরা তার তদন্ত দাবি করছি৷ এই তদন্ত করবে জাতিসংঘ। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো৷
‘আবারও বলছি- আমরা চাই ৭২-এর ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, এমনকি আজ পর্যন্ত যত অপকর্ম হয়েছে, অঘটন ঘটেছে, সুষ্ঠু তদন্ত করে তার শ্বেতপত্র জাতির সামনে প্রকাশ করা হোক। সেই শ্বেতপত্রে আমি যদি কালো বলে চিহ্নিত হই আমাকেও যেন ক্ষমা করা না হয়।
‘আমরা দেখতে চাই এরা কারা। কারা এই জাতির সর্বনাশ করে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুর মারামারি লাগিয়ে দিয়েছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশ ফাংশন করেনি, বিজিবি ঘর থেকে বের হয়নি৷ আমরা সে সময় মন্দির পাহারা দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেভাবেই হোক তারা ক্ষমতায় থেকেছে। কিন্তু যুব সমাজ ভোট দিতে পারেনি। যুবকদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি হয় না।’
ঠাকুরগাঁও নিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এ জেলায় এত বৈষম্য কেন? এখানে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। একটা মেডিক্যাল কলেজ নেই। একটা কৃষি ইইস্টটিউট নেই। বিমানবন্দর চালু নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঠাকুরগাঁওয়ে এসব কাজ করার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হলে অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই। চাঁদাবাজ ও দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ চাই।
‘আমরা যদি ন্যায় ও ন্যায্যতার পথে থাকি তবে আপনাদের সহযোগিতা ও দোয়া আমরা পাবো-এই প্রত্যাশা করি।’