বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুনামগঞ্জে পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠনের যৌথ মানববন্ধন

  • সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি   
  • ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:০৭

‘হাওর ভরাট ও পরিবেশের ক্ষতি করে নয়’- এই স্লোগানের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে

সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠন মঙ্গলবার দুপুরে যৌথভাবে

মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিলেন। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেছেন,

‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নে বিভোর, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোক, সে জন্য স্বেচ্ছাশ্রম দিতে চাই আমরাও। তবে এর প্রস্তাবিত স্থান পরিবর্তন করতে হবে।

মানববন্ধনে ‘আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদ’ এবং হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারাও সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন।

সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দি। পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ

পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) সভাপতি জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. তৈয়বুর রহমান বাবুল, পরিবেশবাদী সংগঠন হাউসের নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম-সিলেটের সভাপতি আবুল হোসেন, হাওর-নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমান রাসেল প্রমুখ। মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা আহ্বায়ক, যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমনুদ্দোজা আহমদ, জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ইজাজুল হক চৌধুরী নাছিম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় ফসলি হাওর ‘দেখার হাওর’। এই হাওরে এসে সংযুক্ত হওয়া মহাসিং নদী এবং এর শাখা উপশাখা, অসংখ্য জলমহাল, খাল- বিল, নদী মিলিয়ে অর্ধ শতাধিকেরও বেশি জলাশয় রয়েছে। হাওরে কেবল জমির পরিমাণ ৪৫ হাজার ৮৫৯ হেক্টর। এর মধ্যে কৃষি ২৪ হাজার ২১৪ এবং অকৃষি ২১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর। হাওরের একাংশে (শান্তিগঞ্জের জয়কলস মৌজায়) ১২৫ একর বোর জমি (আংশিক আমন, পতিত ও গুরস্থান) অধিগ্রহণ করতে চায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস করতে চান তারা, এর দুইপাশে থাকা দুটি ব্রিজের নিচ দিয়ে হাওরের পানি প্রবাহিত হয়ে কালনী নদীতে গিয়ে মিশেছে।

পরিবেশ আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘কোথায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে, এই প্রস্তাব আমরা দিচ্ছি না। তবে হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হতে হবে। হাওর ভরাট করে বিশাল ক্যাম্পাস হলে বৃহৎ এই হাওরের জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। দুটি ব্রিজের (আহসান মারা ও জয়কলস) নিচ দিয়ে যাওয়া খালে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে বোর জমি ও জলাশয়ের ক্ষতি হবে। যার নেতিবাচক প্রভাব সুনামগঞ্জ জেলা সদরসহ পূর্ব এলাকার জনবসতির ওপর পড়বে।

প্রসঙ্গত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের আইন পাস হয় ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু হয়। প্রথম ব্যাচে (২০২৩-২৪) শিক্ষাবর্ষে রসায়ন, গণিত, পদার্থ ও কম্পিউটার বিষয়ে ১২৮, দ্বিতীয় ব্যাচে (২০২৪-২৫) শিক্ষাবর্ষে ১৪৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এখানে ১৭ জন শিক্ষক এবং ২৭ জন স্টাফ রয়েছেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত জেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের কিছু ভবন, একটি মাদ্রাসা, একটি কলেজসহ কিছু ঘরবাড়ি ভাড়া নিয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ জুন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জিএম শহিদুল আলম সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির সুত্র (স্মারক নম্বর ৩৭.০০.০০০০.০৭৬.৯৯.০০২-১৪১) উল্লেখ করে লেখেন- গেল চার জুন ২০২৩ তারিখে স্মারক নম্বর সুবিপ্রবি/১৪৭ মোতাবেক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় বরাবর সুনামগঞ্জ

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণের ও প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন। ওই পত্রের আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১২৫ (একশ’ পঁচিশ একর) জমির প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করেছেন। এরপর জেলাবাসী ও পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলন এবং একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় জমি অধিগ্রহণের অগ্রগতি স্থগিত রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর