বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংবিধান পুনর্লিখন ছাড়া রাজনীতিকরণ থেকে বেরিয়ে আসা অসম্ভব: আলী রীয়াজ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৯ আগস্ট, ২০২৪ ২০:৫৯

ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও সিজিএস অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সদস্য ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘মৌলিক বিষয়গুলো চিহ্নিত না করে তড়িঘড়ি নির্বাচন আয়োজন করলে তা ভালো ফল বয়ে আনবে না। আর অর্থনৈতিক নীতিমালার সংস্কার না করে কাঠামোগত সংস্কার অসম্ভব। অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা এবং প্রয়োজনে চাপ প্রয়োগ করতে নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।’

বাংলাদেশের সংবিধান পুনর্লিখন ছাড়া রাজনীতিকরণ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সদস্য ড. আলী রীয়াজ। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রক্রিয়া ভেঙে দেয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো নিয়ে ধারাবাহিক সংলাপের ঘোষণা দিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিজিএস।

ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘মৌলিক বিষয়গুলো চিহ্নিত না করে তড়িঘড়ি করে কোনো নির্বাচন আয়োজন করলে তা কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না।

‘অর্থনৈতিক নীতিমালার সংস্কার না করে কাঠামোগত সংস্কার অসম্ভব। সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় তাদের উচিত নিজেদের একটি প্লাটফর্ম গঠন এবং বর্তমান সংগঠনগুলোর সংস্কার করা।

তিনি আরও বলেন, ‘ভয়ের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে সব প্রতিষ্ঠানকে। একইসঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এগিয়ে না এলে তা থেকে বের হয়ে আসা প্রায় অসম্ভব।’

সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন প্রয়োজন। একজন আবু সাঈদ দেখিয়ে দিয়েছেন, সাহস করে এগিয়ে এলে সবকিছুই অর্জন সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতাকে সম্মানীয় পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। দলীয়করণের মাধ্যমে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে। সেসঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সংস্কার নয়, গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের প্রতি আমাদের বেশি মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। সব রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিতেই আমরা সবার কথা শুনতে চাই।’

ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানের সময় সাড়ে সাতশ’র বেশি প্রাণহানি হয়েছে এবং দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশাল পরিবর্তন সূচিত হয়েছে।

‘বিগত সময়ে তৈরি করা নীতিমালাগুলো জনগণের কল্যাণের পরিবর্তে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছে। ঋণখেলাপিদের বিচার থেকে রক্ষা করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে কার্যত বিপদাপন্ন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে ধ্বংস করা হয়েছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজন এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় দেশকে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি, সংবিধানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংস্কার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। গণজাগরণের মাধ্যমে তৈরি হওয়া এই আশা ও প্রত্যাশা পূরণ করতে সরকারের ওপর বিশাল দায়িত্ব চেপেছে।’

সিজিএসের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ আয়োজনের কথা বলেন ড. রীয়াজ। বলেন, ‘এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে, যা গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।’

অধ্যাপক রীয়াজ জাতীয় পর্যায়ে ঢাকায় সংবিধান, মানবাধিকার ও গুরুতর আইন লঙ্ঘনের ভুক্তভোগীদের বিচার নিশ্চিতকরণ, বিচার ব্যবস্থা, নাগরিক প্রশাসন, সাংবিধানিক সংস্থাগুলো, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, অর্থনৈতিক নীতিমালাসহ ব্যাংকিং খাত ও বৈদেশিক ঋণ এবং গণমাধ্যমসহ আটটি বিষয়ে জাতীয় সংলাপ করার কথা বলেন। আঞ্চলিক পর্যায়েও একই ধরনের সংলাপ আয়োজনের কথা বলেন তিনি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা এবং প্রয়োজনে চাপ প্রয়োগ করতে নাগরিকদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে ড. রীয়াজ বলেন, ‘শুধু সরকারের ওপর নির্ভর না করে নিজ নিজ জায়গা থেকে সবার দায়িত্ব পালন করা আবশ্যক। ভারতীয় গণমাধ্যম এখন পর্যন্ত যত অপতথ্য বা গুজব ছড়িয়েছে, তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো সত্য তথ্য, প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন করা। তাদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর