বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলা ব্লকেডের সমর্থনে ইবিতে ১১৮ মিনিট মহাসড়ক অবরোধ

  • প্রতিনিধি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ৭ জুলাই, ২০২৪ ১৫:২৯

আন্দোলনে অংশ নেয়া ইবির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্রী লুনা বলেন, ‘আমরা আন্দোলনকারীরা এখন ক্ষুধার্ত। আমাদের এই ক্ষুধা তখনই মিটবে যখন মেধাবীদের তাদের মেধার ভিত্তিতে মূল্যয়ন করা হবে। এখন নারী কোটারও প্রয়োজন নেই। কারণ নারীরা আর সুবিধাবঞ্চিত নয়।’

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি এবং ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করে উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে চতুর্থ দিনের মতো কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে রোববার বেলা ১১টার দিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন কয়েক শত শিক্ষার্থী। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে দেশব্যাপী বাংলা ব্লকেডের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন।

ওই সময় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহমুখী সড়কটি গাছের গুঁড়ি ও টায়ারের আগুন দিয়ে ব্লক করে রাখেন আন্দোলনকারীরা, তবে জরুরি রোগী সেবা দেয়া যানবাহনগুলোকে ছেড়ে দেয়া হলেও বন্ধ রাখা হয় অন্যান্য যানবাহন।

প্রায় দুই ঘণ্টার (১১৮ মিনিট) অবরোধের পর দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা আজকের মতো কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

চতুর্থ দিনের আন্দোলনে গত তিন দিনের তুলনায় নারীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ করা যায়। নারী শিক্ষার্থীরা হল ও মেসে থাকা অন্য শিক্ষার্থীদেরও আন্দোলন আসার আহ্বান জানান।

আজ অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘দাবি এক দফা এক, কোটা নট কামব্যাক’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।

আন্দোলনে অংশ নেয়া ইবির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্রী লুনা বলেন, ‘আমরা আন্দোলনকারীরা এখন ক্ষুধার্ত। আমাদের এই ক্ষুধা তখনই মিটবে যখন মেধাবীদের তাদের মেধার ভিত্তিতে মূল্যয়ন করা হবে।

‘এখন নারী কোটারও প্রয়োজন নেই। কারণ নারীরা আর সুবিধাবঞ্চিত নয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী আইরিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা নারী হয়েও নারী কোটা চাচ্ছি না। তাহলে সেই ৫৩ বছর আগের মুক্তিযুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা কেন কোটার সুবিধা ভোগ করবে?

‘আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করছি না। তাদের অবদান দেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে, কিন্তু সরকারি চাকরিতে এই ৩০ শতাংশ কোটা বৈষম্য সৃষ্টি করে। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাওয়ানা শামিম বলেন, ‘আমি নারী হয়ে অনগ্রসর নই। তাহলে ওইসব গোষ্ঠী কীভাবে বলে তারা এখনও অনগ্রসর। অনগ্রসর বলতে বোঝায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা মূল স্রোতের বাইরে থাকে। আমরা তাদের স্পেশাল সুবিধা দিয়ে থাকি।

‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা এখনও একীভূত হয়নি, তা কীভাবে সম্ভব? তারা আমাদের সাথে একই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়েছে। আমরা একই শিক্ষকের কাছে পড়ি। একই রাইটারের বই পড়ি। তাহলে এখানে বৈষম্যের বিষয়টা আসতেছে কীভাবে? আমাদের যে বন্ধুটার মা-বাবা কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, তারা কি অনগ্রসর গোষ্ঠী নয়? আমাকে নারী কোটা দেয়া হচ্ছে, কিন্তু আমি এমন বৈষম্য চাই না।’

বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ইবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিরুল সৌরভ বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি, কোটা সংস্কার। আমরা কিন্তু বাতিলের কথা বলিনি। যৌক্তিক কোটা সংস্কারের মাধ্যমে মেধাবীদের প্রধান্য দেয়া হলে কিন্তু বিভিন্ন সরকারি অফিস-আদালত থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যায়ে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য হ্রাস পাবে।

‘এ ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করার যে পরিকল্পনা, সেটা মেধাবীদের দ্বারা পূরণ করা সম্ভব। যদি সরকার দাবি মেনে না নেয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবে।’

এর আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের একাধিক শিক্ষক কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন। এ ছাড়াও কোটাকে সহনশীল পর্যায়ে সংস্কারের দাবি জানান তারা।

এ বিভাগের আরো খবর