বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড; রাসায়নিক গুদামটি অবৈধ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ০০:৪৭

* ওই গুদামে ৩ বার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল: ফায়ার সার্ভিস * নিহত প্রতি পরিবারকে ২ লাখ টাকা দেবে সরকার * তদন্ত কমিটি গঠন

ফায়ার সার্ভিসের তৈরি করা অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদাম আলম ট্রেডার্সও ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।তাজুল ইসলাম আরও জানান, সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি তিনবার ওই গুদামে নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। এখন ওই গুদাম অভিযান চালানোর পর্যায়ে ছিল।পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে প্রতিষ্ঠান দুটির মালিকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আনোয়ার ফ্যাশন’ নামের পোশাক কারখানার তৈরি কাপড় স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়। প্রতিষ্ঠানটি বিজিএমইএর তালিকাভুক্ত নয়।মূলত কারখানাটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় পোশাক তৈরি হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে সেফটি-সিকিউরিটি কিছুই ছিল না। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে এর মালিক আনোয়ারের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।পাশের রাসায়নিক গুদামটির নাম আলম এন্টারপ্রাইজ এবং এর মালিক আলমেরও খোঁজ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, দুটি প্রতিষ্ঠানের কোনোটিরই লাইসেন্স ছিল কি না, তা-ও নিশ্চিত করা যায়নি।গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। এই আগুন বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে মিরপুরের রূপনগরে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।ভবনটির দোতলায় স্মার্ট প্রিন্টিং নামের একটি কারখানায় টি-শার্ট প্রিন্ট করা হয়। আর তিন ও চারতলায় আরএন ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানা আছে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ১০ জনের মরদেহ শনাক্তের দাবি করেছেন স্বজনেরা।কেমিকেল গোডাউনের আগুন প্রায় ২৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কেমিকেল গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।এর আগে দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) কাজী নজমুজ্জামান বলেছেন, সকালে আমরা কেমিকেল স্যুট পরে, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে রাসায়নিক গুদামের দরজা খুলেছি। ভেতরের অবস্থা দেখেছি। আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে ধোঁয়ার কারণে এখন আমাদের অভিযান চালানো নিরাপদ নয়। অভিযান শেষ করতে দীর্ঘ সময় লাগবে।তিনি বলেন, বিভিন্ন কেমিকেল থেকে টক্সিক গ্যাস তৈরি হয়েছে। এই গ্যাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে গেলে মানুষের ত্বক, ফুসফুস, হার্টের সমস্যা হতে পারে। আমরা মাইকিং করে স্থানীয়দের বলছি- সবাই দূরে থাকুন, নিজেদের নিরাপদে রাখুন। আমরা ঘটনাস্থলে কাজ করছি, যখন নিরাপদ হবে তখন এটি খুলে দেওয়া হবে। রাসায়নিকের বিষয়টি খুবই বিপদজনক। রাসায়নিক সামগ্রী গুদামজাত করার যে নীতিমালা রয়েছে, সেটি না মানা হলে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের মিশ্রণে বড় ধরনের বিক্রিয়া হতে পারে। এই কারণে একটু বেশি সময় লাগবেই। এদিকে মিরপুরের অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রত্যেক শ্রমিক পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেবে সরকার। এছাড়া আহত শ্রমিকদের চিকিৎসায় ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে এ সহায়তা দেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।গতকাল বুধবার মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডের কারণ, দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ ও ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লস্কার তাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে কমিটি।এছাড়া দুর্ঘটনার জন্য দায়ি ব্যক্তিদের শনাক্ত করা, দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ, আহত ও নিহতদের তালিকা তৈরি, পরিদর্শন প্রক্রিয়ায় কোনো গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখবে এ কমিটি। আগামী এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে একটি সুপারিশ দেবে তারা।

এ বিভাগের আরো খবর