চট্টগ্রামের সদরঘাট স্ট্যান্ড রোডের মাছ ব্যবসায়ীদের প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এনএন ফিশ প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখা থেকে শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করে সিএমপির সদরঘাট থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ইসমাইল হোসেম স্ট্যান্ড রোডের এনএন ফিশ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তিনি কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা সৈন্যেরটেক এলাকার বাসিন্দা।
সদরঘাট থানার ওসি মো. ফেরদৌস জাহান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ হাবিব নামে এক মাছ ব্যবসায়ী তিন কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ তুলে তিনজনের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইসমাইল কয়েক দফায় হাবিবের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকার সামুদ্রিক মাছ কেনেন। এর মধ্যে দুই দফায় ৩০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ৫০ লাখ টাকা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পরিশোধ করার কথা ছিল। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হাবিবের ম্যানেজার সাদ্দামকে টাকার জন্য পাঠালে ইসমাইলের প্রতিষ্ঠান এনএন ফিশের অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান। ফোনও বন্ধ করে দেন ইসমাইল। এরপর থেকে তার খোঁজ মেলেনি।
মামলায় উল্লেখা আছে, সদরঘাট এলাকায় এনএন ফিশ প্রতিষ্ঠানের মালিক ইসমাইল মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন। নোমান ও সাগর কমিশনে তার ব্যবসার দেখাশোনা করতেন।
সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার মাছ কেনেন ইসমাইল। পরে ব্যবসায়ীরা নোমান ও সাগরের কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারাও টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
ওই মাসেই ইসমাইলকে প্রধান আসামি করে সদরঘাট থানায় একটি মামলা করা হয়।
মামলায় গত ৯ মে ভোরে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত ইসমাইলের কর্মচারী আল আমিন প্রকাশ নোমান (৩৯) ও ম্যানেজার কাউছার আহাম্মদ সাগরকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
জানতে চাইলে কর্ণফুলী মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি আবু ইউছুপ বলেন, ‘বিশ্বাসের ওপর আমাদের মাছের ব্যবসা হয়, কিন্তু ব্যবসায়ীদের তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ইসমাইল বিদেশে পালিয়ে ছিলেন।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া বলেন, ‘ইসমাইল প্রথমে এক হাতে ব্যবসা পরিচালনা করলেও পরে সেটা তার শ্যালক নয়ন ও ভাগ্নে সাগরকে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেন। মাছ ব্যবসায়ীরা তাদেরকেই চিনতেন বেশি।
‘ইসমাইল শুধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, কিন্তু তিনি তিন কোটি টাকার মাছ বাকিতে কিনে দুবাই পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইমিগ্রেশনে আবেদন করেছিলাম।’
এ প্রসঙ্গে সিএমপি সদরঘাট থানার পরিদর্শক (ওসি) ফেরদৌস জাহান বলেন, ‘মাছ ব্যবসায়ী হাবিবের দায়ের করা মামলায় আগে দুজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছিলাম। আজ প্রধান আসামি ইসমাইলকে ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ গ্রেপ্তার করেছেন। আমরা অফিসার পাঠিয়েছি তাকে নিয়ে আসা হচ্ছে।’