পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র একদিন। স্বজন-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে যে যেভাবে পারছেন বাড়িমুখে ফিরছেন। শেষ সময়ে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে জেলার ১০৪ কিলোমিটার মহাসড়কে এক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় পড়া যানবাহন দ্রুত সরানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ছয়টি র্যাকার ও চারটি অ্যাম্বুলেন্স। হাটিকুমরুল গোলচত্বর, ঝাঐল ওভার ব্রিজ ও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বরে ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে সড়ক পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের মুলিবাড়ি চেকপোস্ট, কড্ডার মোড়, নলকা ব্রিজ, হাটিকুমরুল গোলচত্বর ও সাহেবগঞ্জ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা থেকে উত্তরের মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ রয়েছে। তবে অনেকটা স্বাভাবিক গতিতেই সবযানবাহন চলাচল করছে। মহাসড়কে যানজটের ভোগান্তি সেই অর্থে তেমন একটা নেই।
জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক দিয়ে উত্তরের ১৬ জেলাসহ প্রায় ২২টি জেলায় চলাচল করে। আর ঈদের সময় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে।
অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে প্রতি বছর বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ অবস্থায় পণ্যবাহী ট্রাক এবং পিকআপেও ঝুঁকি নিয়ে ঘরমুখো মানুষজনকে চলাচল করতে দেখা গেছে।
বগুড়া রুটে বাসচালক আজাদ হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে ২২ কিলোমিটার রাস্তাটি আমাদের জন্য সবসময় আতঙ্কের। প্রতি ঈদে এ মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকে বেশি। আমরা ধীরে চললেও অনেকে আমাদের ওভারটেক করার চেষ্টা করেন। ঠিক সেই সময়ে এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। এজন্য চালকদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।’
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘মহাসড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবার হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে চারটি মহাসড়কের ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার গাড়ি এই গোলচত্বর থেকেই নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়া-আসা করে। ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহনের চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে।’
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) জাফর উল্লাহ বলেন, ‘ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মহাসড়ক পথে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে মহাসড়ক মনিটরিং ছাড়াও পেট্রল টিমের পাশাপাশি রয়েছে কুইক রেসপন্স টিম, অ্যাম্বুলেন্স, রেকারসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা।
‘মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। তবে মহাসড়কের কোথাও কোনো যাত্রী ভোগান্তি ও যানজট নেই। দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করছে।’
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ‘উত্তরের ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত ও মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে জেলা পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও কোনো নেই যানজট।
‘সার্বিক পরিস্থিতি ড্রোন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়াও মহাসড়কে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন দ্রুত সরানোর জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’