মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে কুকুরের কামড়ে ২১ জন আহত হয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন জায়গায় শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত কুকুরটি আক্রমণ করে। আক্রান্তদের জেলা হাসপাতাল ও বিভাগীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কুকুরটিকে আটক করতে শহরে তল্লাশি চালাচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। কুকুর থেকে সাবধান হতে চলছে মাইকিং।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে আড়াই বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধ। তাদের পা, হাত, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে কুকুরের কামড়ে।
আহত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাস্তার মধ্যে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎই লাল রঙের কুকুরটি হাত, পাসহ শরীরের অন্য জায়গায় কামড় বসিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক ওয়ার্ড বয় বলেন, ‘গতকাল হাসপাতালে এক করুণ অবস্থা দেখা গেছে। একসঙ্গে এত আহত রোগী এসেছে। তারা সবাই কুকুরের কামড় খেয়ে এসেছেন।
‘গতকাল কুকুর যেভাবে কামড় বসিয়েছে কারও মুখ, কারও হাত, পা, মাংস বেরিয়ে এসেছিল। মনে হয়েছে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে এরা চিকিৎসা নিতে এসেছেন।’
তিনি বলেন, ‘কুকুরে কামড় দিলে অনেকেই টিকা ক্লিনিক বা ফার্মেসি থেকে নিয়ে নেন। আজ ২০ জন হাসপাতালে এলেও কুকুরের কামড়ে আহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়তো আরও বেশি।’
শনিবার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে কথা হয় সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাহমিদ হাসান চৌধুরীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ২১ জন কুকুরের কামড় খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা প্রতিটি রোগীকে ভ্যাকসিন ও অন্য ওষুধ দিয়েছি। এদের মধ্যে আড়াই বছরের শিশুও ছিল। তার অবস্থা খারাপ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহত আরও দুইজনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কর্ণ চন্দ্র মল্লিক বলেন, ‘একটি কুকুরই সবাইকে কামড় দিচ্ছে। সম্ভবত কুকুরটি পাগল হয়ে গেছে। শহরে কুকুরটি থেকে সাবধানে থাকার জন্য ইতোমধ্যে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ করে মাইকিং করা হয়েছে।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কুকুরের কামড়ের রোগীরা হাসপাতালে আসা শুরু করেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কুকুরের কামড়ে আহত ব্যক্তিরা শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা ও ভ্যাকসিন নিয়েছেন। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে।’