বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লিবিয়ায় অপহৃত ৪ প্রবাসীর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি

  • প্রতিনিধি, নাটোর   
  • ৮ জুন, ২০২৪ ১০:৪৪

স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণকারীরা বাংলায় কথা বলছে, তার মানে তারা বাংলাদেশি। তারা বাংলাদেশের একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা দাবি করেছে, তবে পরিবারগুলোর পক্ষে টাকা পরিশোধের সামর্থ্য না থাকায় তাদের জীবন এখন হুমকির মুখে।’

জীবিকার তাগিদে প্রায় দুই বছর আগে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামের সোহান প্রামানিক, সাগর হোসেন ও বিদ্যুৎ হোসেন পাড়ি জমান আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায়। একই গ্রামের নাজিম আলী দুই মাস আগে লিবিয়াতে যান কাজের জন্য।

সবই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু গত ২ জুন লিবিয়া প্রবাসী এ চার যুবককে জিম্মি করে অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে তাদের পরিবারের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

অপহরণকারীদের পাঠানো ভিডিওতে দেখা যায়, লিবিয়া প্রবাসী সোহানকে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন করছে অপহরণকারীরা। এরপর এক এক করে নাজিম, সাগর ও বিদ্যুৎকেও নির্যাতন করা হচ্ছে।

পরে সেই ভিডিও তাদের পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করছেন অপহরণকারীরা। গত এক সপ্তাহ ধরে মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি যুবকদের পরিবারের কাছে শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠাচ্ছেন তারা।

এতে অপহৃতদের পরিবারে চলছে আহাজারি। দ্রুত চারজনকে মুক্ত করতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।

সরেজমিনে শুক্রবার বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় এ চার পরিবারের সঙ্গে। তাদের আহাজারি ঘিরে জমা হয়েছে গ্রামের শতাধিক নারী পুরুষ।

সোহানের মা দুলি বেগম ও বাবা শাহজাহান আলী বলেন, ‘ইমো নম্বরে কল করে সোহান বলছে তাদেরকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা বাংলায় কথা বলছেন। ১০ লাখ টাকা না দিলে সোহানকে মেরে ফেলবে বলছে। ছেলেকে ঋণ করে বিদেশে পাঠিয়েছি। বাড়ির ভিটে ছাড়া কোনো জমি-জমাও নেই।’

এ অবস্থা থেকে ছেলেকে মুক্ত করতে তারা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

জিম্মি সাগরের বিধবা মা ছকেরা বেওয়া জানান, তিনি সরকারি টিআর কাবিখা প্রকল্পে কাজ করেন। অনেক কষ্টে ঋণ করে সন্তানকে বিদেশে পাঠিয়েছেন। এখন আবার ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছেলেকে ছাড়াতে হবে।

এত টাকা তার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না বলে জানান তিনি।

অপহৃত নাজিমের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, ‘অপহরণকারীরা স্বামীকে ছেড়ে দিতে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে। এখন ১০ হাজার টাকা দেয়ার মতোও সামর্থ্য নেই।’

স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘অপহরণকারীরা বাংলায় কথা বলছে, তার মানে তারা বাংলাদেশি। তারা বাংলাদেশের একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা দাবি করেছে, তবে পরিবারগুলোর পক্ষে টাকা পরিশোধের সামর্থ্য না থাকায় তাদের জীবন এখন হুমকির মুখে।’

সরকারের কাছে তাদের দ্রুত উদ্ধারের পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

নাটোরে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যেহেতু পুরো ঘটনাটি লিবিয়ায় ঘটছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো মোবাইল নাম্বার কিংবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার তারা দেয়নি। তাই এখনও নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবারগুলো কোনো ব্যক্তি বা এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়নি।

‘তাদের ধারণা, ওইখানে বাংলাদেশি কোনো মাফিয়া বা সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়েছে প্রবাসী চারজন। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছি, বাংলাদেশে কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর