‘কোনো সংসদ সদস্যের মৃত্যুর কারণে আসন শূন্য হওয়ার কথা সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ নেই। আনার সাহেব মারা গেছেন কিনা অফিসিয়ালি আমরা জানি না। এক্ষেত্রে সংসদ যেভাবে বলবে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
একজন সংসদ সদস্যের যদি সাধারণ মৃত্য কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে তাহলে সে ক্ষেত্রে ওই আসনে কী হবে তা কি সংবিধানের কোথাও উল্লেখ আছে? এমন প্রশ্নে ইসি মো. আলমগীর বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ বা ৬৭তে এ বিষয়ে আমরা কোনো কিছু উল্লেখ দেখি না। মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে- এটি আমি এ পর্যন্ত সংবিধানে দেখিনি।
‘সাধারণত এটি ধরে নেয়া হয়, যদি সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন তার পক্ষে তো আর সংসদে আসা সম্ভব নয়। এটি ধরে নিয়েই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয় এবং আমাদেরকে যখন জানানো হয়, আমরা সংবিধানের ১২৩ অনুযায়ী নির্বাচন করি।’
ঝিনাইদহ-৪ আসনের ক্ষেত্রে কী হবে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক বা অপমৃত্যু যাই হোক না কেন এটা হলো সংসদের দায়িত্ব। স্পিকার যখন মৃত্যু সনদ পাবেন তখন সংসদ আসটি শূন্য ঘোষণা করবে। শূন্য ঘোষণা করলে গেজেট আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এরপর আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছু স্পষ্ট করে লেখা না থাকলে যে কাজ করা যাবে না তা তো নয়। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত গেজেট না পাব, ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারব না।’
রোববার (২ জুন) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মন্তব্য করেন, ধাপে ধাপে নির্বাচন হলে তা আরও গ্রহণযোগ্য ও ভালো হবে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্য তার ব্যক্তিগত অভিমত। আইনে যা আছে কমিশনকে সেভাবেই নির্বাচন করতে হবে। কমিশন কোনো পরামর্শ, সুপারিশ করতে পারে না।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য হলো- পদ্ধতি যেটাই হোক না কেন তা ঠিক করবে রাজনৈতিক দল, সংসদ, ভোটাররা। যে পদ্ধতিই অনুসরণ করা হোক না কেন, সংবিধানে যে অবস্থা থাকবে সেই অবস্থার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্বাচনটা সুষ্ঠু করার। এটা নিয়ে আমাদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নেই।’
ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার বাড়ানো নিয়ে সিইসির বক্তব্যের বিষয়ে সরকারের সাবেক এই সচিব বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নয়, ইভিএমের ভালো দিকগুলো নিয়ে ব্যক্তিগত আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে যে ইভিএমে বিশ্বাস করা উচিত। কারণ ইভিএমে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, কোনো প্রার্থী বলেননি নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। এ ধরনের একটি অভিযোগও আমরা পাইনি। সব রাজনৈতিক দল যদি ইভিএমে ভোটের বিষয়টি সমর্থন করতো তাহলে ভালো হতো- এমনটাই আলোচনা হয়েছে।’
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধাপে ধাপে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ-অপছন্দের বিষয় নয়। কমিশন কোনো গাইডলাইন দিতে পারে না, সুপারিশ করতে পারে না। বরং সংবিধানে কি আছে, সে অনুযায়ী কমিশনকে ফলো করতে হবে।
‘সংবিধান রচনা করবে জাতীয় সংসদ। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই ঠিক করে দেবেন যে, এ দেশের শাসন ব্যবস্থা কেমন হবে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কেমন হবে, সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে, নির্বাচন ব্যবস্থা কেমন হবে।’