বাংলাদেশের জনগণ কারও ওপর নির্ভর করে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনবে এমনটা বিএনপি মনে করে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, ‘দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আমরা সম্পূর্ণ জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করেই আন্দোলন করছি।’
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সব সময় নিজের শক্তিতে এবং নিজের পায়ের ওপর ভর করে ৭০ সালের আগে আন্দোলন করেছে, ৭০ সালে আন্দোলন করেছে, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। পরবর্তীকালে আমরা যে আন্দোলন করছি, তা-ও সম্পূর্ণ জনগণের শক্তির ওপর নির্ভর করেই।’
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একেবারে ভয়াবহ পর্যায়ে। খাদের কিনারায় চলে গেছে। পড়ে যাবে।’
বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য কী ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা যায় এবং কীভাবে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তার বিশ্লেষণ- সেসঙ্গে কর্মসূচি নির্ধারণে আমরা প্রাথমিক কিছু আলোচনা করেছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। দেশে একটা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। বর্তমান যে অবৈধ সরকার, যারা বিনা ম্যান্ডেটে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রাম ও লড়াই করছি। এজন্য আমরা প্রায় ৬৩টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করে আসছি।’
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমাদের অতীতের আন্দোলনের বিষয়বস্তু নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছি। সেখানে জনগণের যে সমর্থন ও রাজপথে উপস্থিতি ছিলো, সেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকার যেভাবে দমন-পীড়ন করেছে এবং আইন-আদালতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বিরোধীদল নির্মূল করে একদলীয় শাসন কায়েমের জন্য সরকারের যে অপচেষ্টা, সেটা নিয়ে আমরা সবাই সতর্ক আছি। এই স্বৈরশাসনের অবসান না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলন চলবে।’
নুর ছাড়াও বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, অ্যাডভোকেট নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, মাহফুজুর রহমান খান, রবিউল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ও মানবাধিকার সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যরা পরে গণতান্ত্রিক বামঐক্যের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির (পিডিপি) মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ডা. সামছুল আলম ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী।