গত বুধবার সন্ধ্যায় বেলকুচি থানার ভেতরে হামলার কারণে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থতি অবনতি ঘটে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুললে মেজাজ হারিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
সে সময় সাংবাদিকদের ‘সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করলেই তো সব কিছু জানা যাবে’ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো থাকে, অনেক সময় সেটা দিয়ে কাজ হয় না। অনেক সময় ফুটেজের ওই মূল্যবান অংশ/জায়গায় সিসিটিভি ঠিকমতো কাজ করে না।’
শুক্রবার সকালে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার তিন উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়াম মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
এ সময় বেলকুচি থানার ভেতর আমিনুল ইসলাম নামে এক চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার সমর্থকরা প্রবেশ করে পুলিশের সামনে অপর প্রার্থী বদিউজ্জামান ওপর হামলা করেন। এই বিষয়ে সকল তথ্য-প্রমাণসহ মামলা করলেও পুলিশ এখনও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটা পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণ কি না- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে ক্ষেপে গিয়ে কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই বলব না। কোর্ট আছে, থানা আছে, আইজিপি আছে, আরও অনেক জায়গা আছে যেখানে গেলে উনি সুবিধা পাবেন; সেখানে যাবেন। কমিশন জানলেই তো ব্যবস্থা নেবে, না জানলে কীভাবে ব্যবস্থা নিবে? প্রার্থীদের লিখিত দিতে বলেন।’
তিনি বলেন, ‘কমিশন জেনেছে, অথচ ব্যবস্থা নেয়নি- এমন নজির একটিও নেই। আমি কমিশনার, অগ্রিম কথা বলব না। যদি আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়, তাহলে এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে নির্বাচনে স্থানীয় সংসদের হস্তক্ষেপ ও কালো টাকার প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচন কমিশন কতটুকু ভূমিকা রাখবে- প্রার্থীদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আইনের ব্যত্যয় ঘটালে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেয়া হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রার্থীদের কোনো অভিযোগ থাকলে কমিশনে অভিযোগ দেবে। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখব। সেগুলোর তথ্য-প্রমাণ নেব, তদন্ত করবো। সত্য প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
প্রভাবশালীরা নির্বাচনে কোনোরকম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে তাদেরও ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
মতবিনময় সভায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ন কবীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান ও রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল। এছাড়াও জেলার তিনটি উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।