পানিতে ডুবে নাটোর, জামালপুর ও ঝালকাঠিতে দুই ভাই, দুই বোন ও এক মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ঝালকাঠিতে পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছে আরও এক শিশু।
শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১টার মধ্যে এই ঘটনাদুটি ঘটে।
সিংড়ায় দুই বোনের মৃত্যু
নাটোরের সিংড়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে মামাতো ফুফাতো দুই বোনের।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ঢাকঢোল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- ওই গ্রামের ফারুক হোসেনের মেয়ে ফারিয়া আক্তার এবং নাটোর শহরের তেবাড়িয়া এলাকার সৌদি প্রবাসী রায়হান হোসেনের মেয়ে ফাতেমা খাতুন।
লালোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল ইসলাম শুভ জানান, সাত বছর বয়সী ফারিয়া এবং একই বয়সী ফাতেমা সবার অগোচরে বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে নামে। এরপর তারা ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে পুকুরে তাদের মরদেহ ভেসে উঠতে দেখে স্থানীয়রা মরদেহ দুটি ডাঙায় তোলে।
ফাতেমা নানা ফরিদ হোসেনের বাড়িতে ঈদ উপলক্ষে বেড়াতে এসেছিল জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, দুই বোনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জামালপুরে মাছ ধরতে গিয়ে ডুবে মরল দুই ভাই
এদিকে জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে মিনহাজ উদ্দিন ও মৃণাল মিয়া নামে দুই সহোদর ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার দুপুরে উপজেলার সাপধরি ইউনিয়নের চরশিশুয়া এলাকায় যমুনা নদীতে নানির সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে যায় তারা।
মিনহাজ ও বয়স মৃণালের যথাক্রমে ১০ ও ৮ বছর। উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের জারুলতলা এলাকার আজাহার মিয়ার ছেলে তারা। ঈদের দুদিন আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে তারা নানা দুদু সরকারের বাড়িতে বেড়াতে আসে।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর ১টার দিকে বাড়ির পাশে নানির সঙ্গে যমুনা নদীতে মাছ ধরতে যায় ওই দুই শিশু। একপর্যায়ে নদীর পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয় তারা। অনেক খোঁজাখুজির পর এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর তাদের মহদেহ নদীতে ভেসে ওঠে। পরে স্থানীয়রা তাদের মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাপধরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ আলম মন্ডল জানান, ‘তাদের নানা খুবই দরিদ্র, নদীতে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আজ দুপুরে নানির সঙ্গে যমুনা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।’
ঝালকাঠিতে দুই শিক্ষার্থীর একজনের মরদেহ উদ্ধার, অপরজন নিখোঁজ
অন্যদিকে, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বৈচণ্ডী গ্রামে জুবায়ের ইসলাম নামের ছয় বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্র পানিতে ডুবে মারা গেছে।
নিহত জুবায়ের নলছিটি পৌর এলাকার মারকাযুল কুরআন মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করত। সে ওই গ্রামের মনিরুজ্জামান গাজীর ছেলে।
নিহত শিশুটির বাবা মনিরুজ্জামান জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে জুবায়েরকে বাসায় দেখতে না পেয়ে বাড়ির সবাই খুঁজতে থাকে। খুঁজতে খুঁজতে পার্শ্ববর্তী একটি মাছের ঘেরের পাশে তার পায়ের জুতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ঘের থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, একই উপজেলার কলবাড়ি নামক স্থানে সুগন্ধা নদীতে নিখোঁজ হয়েছে নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আদিত্য চক্রবর্তী।
নিখোঁজ হওয়া আদিত্য বাদুরতলা সড়কের আদর ষ্টুডিওর সত্ত্বাধিকারী শিমুল চক্রবর্তীর ছেলে।
নিখোঁজের বাবা শিমুল চক্রবর্তী জানান, চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে পরিবারের সঙ্গে গঙ্গাস্নান করতে যায় ছেলেটি। একপর্যায়ে হঠাৎ করে নদীতে তলিয়ে নিখোঁজ হয় সে।
শনিবার সকালে এ ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও স্থানীয়রা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশুটির সন্ধান মেলেনি।
এ দুই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নলছিটি থানার ওসি মো. মুরাদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘থানা পুলিশের কর্মকর্তারা পৃথক দুটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিখোঁজের সন্ধানে দমকল বাহিনীর ডুবুরিদের সহযোগিতা করছে পুলিশ।’