চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মারধর থেকে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হওয়া সেই বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আহত হওয়ার পর ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবাার সকাল ৬টার দিকে নগরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম কুরবান আলী (৬০)।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার বিকেলে আকবর শাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ হাউজিং এলাকার জে লাইন দিয়ে যাচ্ছিলেন আলী রেজা। এ সময় তিনি দেখতে পান দুই স্কুল ছাত্রকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মারধর করছিল। সঙ্গে সঙ্গে আলী রেজা ৯৯৯-এ কল দেন। পুলিশ এসে একজনকে ধরে নিয়ে যায়।
পরে ওই দিন সন্ধ্যায় ইফতারি কিনতে বের হন আলী রেজা। তখন তাকে পেয়ে মারধর করতে থাকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন তার বাবা কুরবান আলী। এ সময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
প্রথম কুরবান আলীকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় শনিবার আলী রেজা বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আকবর শাহ থানায় মামলা করেন। আসামিরা হলেন মো. সামির, মো. রিয়াদ, সোহেল ওরফে বগা সোহেল, মো. আকিব, মো. অপূর্ব, মো. নিশান, মো. রাজু, মো. সাগর, মো. বাবু, মো. রাজু, মো. সংগ্রাম ও মো. সাফায়েত। এ ছাড়া আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রাব্বানী বলেন, ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম নগরে অন্তত ২০০ কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। একেক দলে রয়েছে ৫ থেকে ১৫ জন। পুলিশের হিসাবে, নগরজুড়ে এসব গ্যাংয়ের সদস্যসংখ্যা অন্তত ১ হাজার ৪০০।
পুলিশ বলছে, কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা বা প্রশ্রয় দিচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬৪ জন ‘বড় ভাই’। গত ৬ বছরে ৫৪৮টি অপরাধের ঘটনায় কিশোর গ্যাং জড়িত বলে জানায় পুলিশ। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩৪টি।