ঈদকে সামনে রেখে গণপরিবহনের ভাড়ায় নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
যাত্রীদের স্বার্থ সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে সরকার যখন বাস ভাড়া কমানোর চেষ্টা করছে, এমন সময়ে কমানো ভাড়া কার্যকর করার পরিবর্তে পবিত্র ঈদুল ফিতরের যাতায়াতে দেশের বিভিন্ন রুটে বাস, লঞ্চ, উড়োজাহাজসহ বিভিন্ন শ্রেণির গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নামে নৈরাজ্য শুরু হয়েছে।
‘সরকার প্রতি বছর ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যকারী গণপরিবহনগুলোকে কাগুজে বাঘের মতো হুঁশিয়ারি দিলেও কার্যকর অর্থে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে এবারের ঈদের অনলাইন টিকিটে বিভিন্ন রুটে বিভিন্ন শ্রেণির পরিবহন কোম্পানিগুলো প্রকাশ্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলেও তাদের বিরুদ্ধে অতীতের মতো কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।’
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশপথে দ্বিগুন-তিন গুণ দামে বিমানের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সড়কপথে বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটে ৫ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত (যাত্রার জন্য) দেড় গুণ বাড়তি; ৮, ৯ ও ১০ এপ্রিলের (জন্য) কোথাও দ্বিগুণ, কোথাও তিন গুণ বাড়তি দামে বাসের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। নৌপথে বিভিন্ন রুটে কেবিনের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ-তিন গুণ বাড়তি ভাড়ায় টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
‘এহেন ভাড়া নৈরাজ্য প্রকাশ্য ঘটলেও সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর এখনও কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। এহেন পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের লোকজন ও গার্মেন্টস কর্মী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা ঈদের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়ছে।’
মোজ্জামেল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে সংশিষ্ট বাস কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন পুলিশের আইজিপি। বিআরটিএ, বিআইডব্লিউটিএ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও এমন ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে কেউ এগিয়ে আসছে না।
‘যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ বলছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না গেলে ঈদযাত্রায় নিম্ন আয়ের লোকজনের বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, পণ্যবাহী পরিবহনে, ফিটনেসবিহীন সিটি বাসে, খোলা ট্রাকে, মোটরসাইকেলে, ট্রাকের পণ্যের ওপরে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না।’