মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় রসুলপুর খাদ্য গুদাম থেকে রাতের আঁধারে ২৫০ টন চাল সরানোর ঘটনায় সৈয়দ সফিউল আজম নামে এক খাদ্য পরিদর্শককে আটক করেছে পুলিশ। সরিয়ে ফেলা চালের বাজার মূল্য ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেশি বলে জানা গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খাদ্য গুদামের ৪ নম্বর ভবনটি সিলগালা করেছে প্রশাসন। বাইরে থেকে কোনো গাড়ি এবং খাদ্য গুদামের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের খাদ্য গুদাম এলাকায় প্রবেশ করতে সাময়িকভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
গজারিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘গত ১৯ মার্চ আমি রসুলপুর খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে যাই। এ সময় ৪ নম্বর ভবন পরিদর্শনের সময় মজুদকৃত চালের পরিমাণ অনেক কম দেখতে পাই। চালের পরিমাণ ৪৩১ টন হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে অনেক কম পাওয়া যায়। বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হই, এখান থেকে অধিকাংশ চালের বস্তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গত ১২ মার্চ থেকে গুদামের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও নেই।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি লিখিতভাবে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেছি। এরপর এক খাদ্য পরিদর্শককে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
আটক হওয়ার আগে ঘটনা সম্পর্কে খাদ্য পরিদর্শক সৈয়দ সফিউল আজমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না। আমার যা বলার আমি তা বলে দিয়েছি।’
গজারিয়া উপজেলা সাবেক খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে গজারিয়া উপজেলা থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে এসেছি। খাদ্য গুদাম থেকে চাল চুরি বা সরানোর বিষয়ে কিছু জানি না।’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া ইউএনও কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘সদ্য যোগদান করা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লিখিতভাবে বিষয়টি আমাকে জানানোর পর ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। গুদামে মজুদকৃত চালের পরিমাণে বড় ধরনের গরমিল পাওয়া গেছে। গুদামের দায়িত্বে থাকা খাদ্য পরিদর্শক সৈয়দ শফিউল আজমকে ইতোমধ্যে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
গজারিয়া থানার ওসি রাজিব খান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এক কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’