পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি জামায়াতে ইসলামীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে জোট গঠন করে রাজনীতিতে পুনর্বাসন না করলে বাংলাদেশের জেনোসাইড অনেক আগেই স্বীকৃতি পেত।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে জেনোসাইড: আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিক্যাব সভাপতি নূরুল ইসলাম হাসিবের সভাপতিত্বে সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশের জেনোসাইড স্বীকৃতি পেয়েছে। সে দেশগুলোতে আমাদের মতো ৩০ লাখ নয়, তিন থেকে চার লাখ মানুষ মারা গেছে।
‘আমাদের এখানে জেনোসাইড স্বীকৃতি না পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে- যারা মুক্তিযুদ্ধ চায়নি, সেই অপশক্তিকে নিয়ে রাজনীতি করার প্রবণতা এবং জামায়াতে ইসলামীসহ যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল তাদের নিয়ে জোট গঠন করে রাজনীতিতে তাদের পুনর্বাসন করা।
‘পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার প্রবণতা, গণহত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আড়াল করার প্রবণতা- এগুলো না থাকলে বাংলাদেশের জেনোসাইড অনেক আগেই স্বীকৃতি পেত।’
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের জেনোসাইডের স্বীকৃতি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘে দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও গবেষকবৃন্দকে নিয়ে একটি সেল গঠন করে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সমসাময়িক প্রসঙ্গে বলেন, ‘৭ জানুয়ারির সুষ্ঠু নির্বাচনের পর বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশ ও ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমি দেখলাম, এখন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলছেন- তাদের কৌশলে নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়েছে। আমরা সবসময় তাদের নির্বাচনে আসতে বলেছি আর তারা নির্বাচন ভণ্ডুলের অপচেষ্টা করেছে। এখন তারা স্বীকার করছে যে নির্বাচনে অংশ না নেয়াটা তাদের বিরাট ভুল ছিল।’
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের সমাপনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: নিউজবাংলা
ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী
রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের সমাপনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় ১৩টি দেশ ও সংস্থা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ মোট ১৫টি দলের অংশগ্রহণে এ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সুইডেন ও রানার্স-আপ ডেনমার্কের দলসহ প্রতিযোগীদের হাতে মেডেল ও পুরস্কার তুলে দেন মন্ত্রী। ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ের পুরস্কারে ভূষিত হন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাক্টিং হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।