নতুন মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভার পেয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি নতুন সরকারে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলাবেন।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মন্ত্রী হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করেন তিনি।
শপথপাঠ অনুষ্ঠানে নিজ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে খ্যাতনামা এ চিকিৎসক বলেন, ‘আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে মন্ত্রী হব। এটা আমার কাম্য ছিল না। যাই হোক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখে মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন, আমি সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করব।’
মন্ত্রিত্ব পাওয়ার বিষয়ে অবাক হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের ফোন পেয়ে আমি ভেবেছিলাম, তার মনে হয় কোনো রোগী আছে এখানে। কিন্তু তার কথা শুনে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমি তো প্রথমে বিশ্বাসই করিনি! ভেবেছিলাম ভুল ফোন হতে পারে। তবে সত্যিই আমি মন্ত্রী হলাম। এটা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ।’
বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন টেকনোক্র্যাট কোটায় সামন্ত লাল সেনের নাম ঘোষণা করেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য সুপরিচিত একজন চিকিৎসক। তিনি দেশের বার্ন ইনস্টিটিউটগুলোর সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন।
ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বার্ন বিভাগ চালু হয়। সামন্ত লাল সেন সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সামন্ত লাল সেন। চিকিৎসা সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে ২০১৮ সালে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।
১৯৪৯ সালের ২৪ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সিলেটের হবিগঞ্জের নাগুরা গ্রামে অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন জন্মগ্রহণ করেন। ডা. সেন্ট ফিলিপস হাই স্কুল থেকে ১৯৬৪ সালে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮০ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা থেকে ‘ডিপ্লোমা ইন স্পেশালাইজড সার্জারি’ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে জার্মানি ও ইংল্যান্ডে সার্জারিতে আরও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন দেশবরেণ্য এ চিকিৎসক।