রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা যখন প্রথমবার সংসদ নির্বাচন করেন, তখন তার হাতে নগদ টাকা ছিল ১৫ হাজার। তবে এখন তার নগদ টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৫ টাকা। গত দেড় দশকে ফজলে হোসেন বাদশার অর্থ-সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ; হয়েছে নতুন বাড়ি-গাড়ি।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। তবে এ ব্যাপারে ফজলে হোসেন বাদশার দাবি, তার অর্থ বৃদ্ধিতে অস্বাভাবিক কিছু নেই।
২০০৮ সালের নির্বাচনে হলফনামায় দেখা গেছে, ওই সময় ফজলে হোসেন বাদশার সব মিলিয়ে এক কোটি ১২ লাখ ৭ হাজার ৬৪০ টাকার সম্পদ ছিল। সে সময় তার নগদ অর্থ ছিল মাত্র ১৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে ছিল ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬০টাকা। তার স্ত্রীর বিয়েতে উপহার পাওয়া ৫০ ভরি সোনা ছিল। এর বাইরে আসবাবপত্র, গাড়ি মিলে মোট ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার সম্পদ ছিল। বাদশার স্ত্রীর নামে ছিল ৫ কাঠা জমি। এ ছাড়াও তার পরিবারের সাবার মিলে একটি সেমিপাকা মার্কেট ও ১৬ কাঠা জমি ছিল। ছিল একটি দোতলা বাড়িও।
২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলনামার তথ্যে দেখা যায় তার সম্পদ ও অর্থ অনেকটাই বেড়ে গেছে। ওই হলফনামায় দেখা যায়, শুধুমাত্র নগদ অর্থ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ২০ হাজার ৫৯১টাকা। এছাড়াও ব্যাংক ও নগদ অর্থ মিলে দাঁড়ায় ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫১৫ টাকা। এ ছাড়া ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩০ টাকা দামের গাড়ি, বাড়ির আবসাবপত্র বেড়ে দাঁড়ায় ২০ লাখ টাকা। সে সময় তার রাজধানীর উত্তরায় ৫ কাঠা জমিও হয়।
২০১৮ সালের নির্বাচনকালে তার অর্থের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। ওই বছরের হলফনামায় দেখা যায়, বাদশার হয়েছে নতুন মার্কেট। গুড়িপাড়ায় হয়েছে ৫ কাঠা জমি। হড়গ্রামে নির্মিত হয়েছে খন্দকার মার্কেট কমপ্লেক্স। নগদ ও ব্যাংক মিলে সে সময় অর্থ দাঁড়ায় ৪১ লাখ ১৬ হজার ৪৮৬ টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর নগদ টাকা ও সেভিংস মিলে দাঁড়ায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দুটি গাড়ির দাম দেখোনো হয় ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে তার সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে তার সম্পদের যে বিবরণ দাখিল করেছেন, সেখানে তার নগদ ও ব্যাংকে টাকার পরিমাণ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এবারের হলফনামা থেকে দেখা যায়, তার মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৫ টাকা। এর মধ্যে তার নগদ টাকা রয়েছে ২৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর বাইরে একটি ৭০ লাখ টাকার জিপ গাড়ি রয়েছে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমাদের পারিবারিক আয় বেড়েছে। এটা নিশ্চয় আমাদের গাড়ি-বাড়ি দেখে বুঝতে পেরেছেন। এটি আমাদের পারিবারিক আয়। এটি একক নয়। এর বাইরে গাড়ি আমাদের ব্যাংক লোন থেকে নেয়া হয়েছে। এটি সব এমপিই নেন, আমিও নিয়েছি।’
তার এই আয়কে স্বাভাবিক বলেই দাবি করেন ফজলে হোসেন বাদশা।