মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবাহান মিয়া গোলাপের নগদ অর্থ স্ত্রীর নগদ অর্থের চেয়ে ১২ গুণ কম। তবে ব্যাংকে জামানতের পরিমাণ স্ত্রীর সম্পদের চেয়ে বেশি রয়েছে। এ ছাড়া এমপি হওয়ার আগে গাড়ি না থাকলেও এমপি হয়ে কিনেছেন কোটি টাকার গাড়ি।
আবদুস সোবাহান মিয়া গোলাপ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার স্ত্রী ও নিজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণী জমা দিয়েছেন। সেখানেই মিলেছে এসব তথ্য।
মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন, কালকিনি ও ডাসার উপজেলা নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-৩ নির্বাচনি এলাকা। এই নির্বাচনি এলাকা থেকে ২০১৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুস সোবহান মিয়া। তিনি এলাকায় গোলাপ নামে অধিক পরিচিত।
হলফনামা মোতাবেক আবদুস সোবাহান মিয়ার এমপি হওয়ার আগে ২০১৮ সালে কোনো গাড়ি ছিল না, এমপি হয়ে কিনেছেন কোটি টাকার গাড়ি।
হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে তার নিজের নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল ৫১ লাখ ৯ হাজার ৬৯০ টাকা। বর্তমানে তার জমা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৯৩১ টাকা এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ টাকা।
তার সম্পদের বিবরণী বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, আবদুস সোবাহান মিয়ার নগদ অর্থের পরিমাণ ১৫ লাখ ২৮ হাজার ৬১৪ টাকা, তার স্ত্রীর নগদ অর্থ ১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৩ টাকা। যা এমপির চেয়ে ১২ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি। আর ২০১৮ সালে তার নগদ টাকা ছিল ৭৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৬৬ টাকা এবং স্ত্রীর গুলশান আরার নামে ছিল ১ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ১৩১ টাকা।
২০১৮ সালের হলফনামা মোতাবেক তার স্ত্রীর কাছে ৯৮ হাজার ১১৮ ইউএস ডলার থাকলেও চলতি বছরে তার কাছে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা নেই বলে জানা গেছে।
তবে আবদুস সোবহানা মিয়া গোলাপের আগের হলফনামা মোতাবেক আগে কোনো গাড়ি না থাকলেও বর্তমানে তার একটি টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ রয়েছে। যার বাজার মুল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৯০ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৭ টাকা।
আবদুস সোবহানা মিয়া গোলাপ ও তার স্ত্রী গুলশান আরার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৮ সালে তার নিজের নামে জমা ছিল ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল ৫১ লাখ ৯ হাজার ৬৯০ টাকা। বর্তমানে তার জমা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৯৩১ টাকা এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ টাকা।
অন্যদিকে তার নামে ২০১৮ সালে বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার ছিল ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬৯ হাজার ৩ ৭২ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার।
২০২৩ সালে বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৯২ টাকার এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার। এ ছাড়াও মিরপুর এবং উত্তরাতে তার দুটি দালান রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মাদারীপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, ‘সব প্রার্থীই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা জমা দিয়েছেন। আমরা প্রাথমিকভাবে সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, তবে কারও ব্যাপারে কোনো আপত্তি আসলে, তা আবার যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।’