প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার অনুগতরা দশকের পর দশক ধরে বিএনপিকে ধ্বংসের জন্য উঠে-পড়ে লেগে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বিশ্ব মানচিত্রে লাল-সবুজের পতাকা যতদিন থাকবে ততদিন বিএনপি এ দেশে থাকবে ইনশাআল্লাহ!’
রোববার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপির ওপর যতবার আঘাত এসেছে ততবার আরও শক্তিশালী হয়েছে। প্রতিবারই চোরাবালি থেকে জেগে উঠে চারদিকে বিস্তার লাভ করেছে। বিএনপিকে ধ্বংস করতে ওয়ান ইলেভেনের বেআইনি সরকারও সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বরং বিএনপি এখন বাংলাদেশের ঘরে ঘরে তৃণমূল শক্তি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন ‘প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেছেন যে আগামী ১০-১৫ বছরে বিএনপি বলে কোনো দল বাংলাদেশে আর থাকবে না। তার মানে এই সময়ে তারা বিএনপিকে ধ্বংস ও নিঃশেষ করে দেবেন! দেশে একটাই রাজনৈতিক দল থাকবে, যেখানে ভিন্ন মতাদর্শের কেউ থাকতে পারবে না; কেউ স্বৈরাচারী সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না। বাকশাল-২ স্থাপিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুম, আয়নাঘরে বন্দি এবং ক্রসফায়ার করেও বিএনপি নেতাকর্মীদের দমানো যায়নি। বিএনপিকে ভাঙার সরকারের কোনো অপচেষ্টাই সফল হয়নি। তাই শত শত কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন সংস্থা ও মাধ্যম দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুৎসিত অপপ্রচার করেও লাভ হয়নি।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেরণা এবং মুক্তিকামী মানুষের আশা-ভরসার স্থল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গোটা বাংলাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ। সুতরাং আগামী ১০-১৫ বছর কেন, বিশ্বের মানচিত্রে লাল-সবুজের পতাকা যতদিন থাকবে ততদিন বিএনপি এ দেশে থাকবে ইনশাআল্লাহ!’
বিবৃতিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ে বাঁধভাঙা আন্দোলনে স্ফুলিঙ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অনিবার্য গণঅভ্যুত্থানের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে বাংলাদেশ।
‘স্বৈরাচার পতনের কাউন্টডাউনের মধ্যে আরেকটি একতরফা পাতানো নির্বাচনের অপচেষ্টা চলছে। মেরুদণ্ডহীন পাপেট নির্বাচন কমিশন আওয়ামী নির্বাচনী তফসিল বাস্তবায়ন করতে মুখ লুকিয়ে জোরেশোরে মাঠে নেমেছে। আর সরকারের অবৈধ মন্ত্রী-এমপি, নেতা-কর্মী, আওয়ামী লীগ সমর্থক পুলিশ-র্যাাব-গোয়েন্দারা গোটা দেশে ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে হায়েনার মতো। আওয়ামী নিপীড়নে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন মৃত্যু থেকে কয়েক মিনিট দূরে অবস্থান করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দুনিয়া টের পেয়েছে বিএনপির নামে সন্ত্রাসের অপবাদ মূলত একতরফা নির্বাচনের কৌশল। এবারও অন্তর্ঘাতমূলক নাশকতার গতি বাড়িয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তাদের পক্ষ নিয়েছে জনগনের টাকায় বেতনভোগী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দলদাস কর্মকর্তারা। কিন্তু তাদের জানা উচিত এই নিশুতি সরকারই শেষ সরকার নয়। কিছুদিন পরই হবে জনগণের সরকার। তখন এই আজ্ঞাবাহী দলদাস পোশাকী সন্ত্রাসীদের পরিণতি কী হবে জনগন সে সিদ্ধান্ত নেবে।’
রিজভী বিবৃতিতে দাবি করেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৫১০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মহাসমাবেশের ৪/৫ দিন আগে থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ১৩ হাজার ৭২০ নেতাকর্মীকে।