বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিশু বায়েজিদ হত্যার প্রধান আসামির বাবাকে পিটিয়ে মারল জনতা

  • প্রতিনিধি, গাইবান্ধা   
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ২৩:৩২

শিশু বায়েজিদের বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষোভে ৪ চার বছরের বায়েজিদকে নৃশংসভাবে হত্যা করে প্রেমিক সাকিব হাসান ওরফে রোমান।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে চাঞ্চল্যকর চার বছরের শিশু বায়েজিদ হত্যাকাণ্ডে সেরেকুল নামের এক ব্যক্তি সংঘবদ্ধ পিটুনিতে নিহত হয়েছেন। নিহত সেরেকুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাকিব হাসান ওরফে রোমানের বাবা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের বালুখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সেরেকুলের মৃত্যুর বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মুন্তাসির মামুন শুভ। তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তিকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।’

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ঘোড়াবান্দা চৌরাস্তা বাজারের একটি হোটেলে সেরেকুলের অবস্থান টের পেয়ে বালুখোলা গ্রামের সহস্রাধিক উত্তেজিত নারী-পুরুষ সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। উত্তেজিত জনতা এক পর্যায়ে সেরেকুলকে টেনে-হিঁচড়ে হোটেল থেকে বের করে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। মার খেয়ে তিনি সঙ্গা হারান। স্থানীয়রা অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশে খবর দেয়। পলাশবাড়ি থানা পুলিশ এসে সেরেকুলকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে পাঠালে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) উদয় কুমার সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মুমূর্ষু সেরেকুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাই। তবে পথিমধ্যেই তার মৃত্যু হয়।’

তিনি জানান, সেরেকুল পলাতক ছিলেন। এ ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পিটুনির সঙ্গে অন্য কোনো বিষয় যুক্ত আছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছ।

প্রসঙ্গত, গত ৮ মে বিকেলে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের বাড়ির উঠানে খেলার সময় নিখোঁজ হয় শিশু বায়েজিদ। পরে তার স্বজনরা এলাকার আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে ওইদিনেই বিষয়টি হরিণাবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রকে অবহিত করে। পুলিশও তাৎক্ষণিক শিশুটিকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়।

পরে মনোহরপুরসহ আশপাশের এলাকায় মাইকিং করে শিশুটির পরিবার। তাতেও সন্ধান না মেলায় পরদিন ৯ মে মঙ্গলবার সকালে পলাশবাড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন বায়েজিদের মা রায়হানা বেগম।

জেলাজুড়ে মাইকিং চলে টানা দুইদিন। তাতেও সন্ধান না মেলায় ১০ মে রায়হানা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করে পলাশবাড়ি থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। নিখোঁজের ৫ দিন পর ১৩ মে সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়দের খবরে ওই এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে শিশু বায়েজিদের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার দিনই হরিণাবাড়ি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই বুলবুল আহমেদকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ক্লোজ করা হয়। পরে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় হরিণাবাড়ির পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ওসি নূর আলম সিদ্দিককে। এরপর হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় একই এলাকার সিরিকুল ইসলামের ছেলে ১৭ বছরের রোমান মিয়া ও তার বন্ধু একই বয়সী শরিফুল ইসলামকে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

এরপর ১৬ মে দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ জানায়, শিশু বায়েজিদের বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষোভে ৪ চার বছরের বায়েজিদকে নৃশংসভাবে হত্যা করে প্রেমিক সাকিব হাসান ওরফে রোমান।

ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, জিজ্ঞাসাবাদে রোমান দাবি করে, নিহত বায়েজিদের বোন তিশা আক্তারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে ঢাকা থেকে ফিরে আসার পর তিশা রোমানের থেকে দূরে থাকে এবং এক পর্যায়ে তাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। পরে তিশার পরিবার তিশাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে রোমান এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়।

পলাশবাড়ি থানার ওসি আরজু মো. সাজ্জাত বলেন, ‘সেরেকুল ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন না। কিন্তু আমাদের তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তবে এখনও আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়নি। তিনি পলাতক ছিলেন।’

এ বিভাগের আরো খবর