প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার কারণেই কারাগারের বদলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাসায় থাকতে পারছেন বলে মনে করছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তার মতে, বিষয়টি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যরা টের পাচ্ছেন না।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে ‘কনফেডারেশন অভ ফিল্ম, টিভি এন্ড ডিজিটাল মিডিয়া প্রফেশনালস’ প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার থাকার কথা কারাগারে, বাইরে থাকার কথা নয়। তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীমিহওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তার সাথে নিয়মিত দেখা করে, যোগাযোগ রাখে এবং তার দলের নেতারাও যায়। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বড় মহানুভবতা।
‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতাদের বঙ্গবন্ধু কন্যাকে ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ। উনারা বুঝি সেটি টের পাচ্ছেন না যে, প্রধানমন্ত্রী কী রকম মহানুভবতা দেখিয়েছেন। তাকে বাইরে থাকার ব্যবস্থাটা যদি বাতিল করা হয়, তখন সম্ভবত তারা টের পাবেন, বেগম জিয়ার জন্য কী পরিমাণ মহানুভবতা শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে শেখ হাসিনার প্রতি মহানুভবতা দেখাতেন না। যেখানে তার বাড়ির সামনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে থাকার পর দরজা খোলেন নাই, যেখানে ১৫ আগস্ট জন্মদিন না হওয়া সত্বেও তিনি কেক কাটেন, যেখানে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পর সেটা নিয়ে হাস্যরস করেন, সেখানে বেগম জিয়া এ ধরনের সহানুভূতি দেখাতেন না, সেটা খুবই স্পষ্ট।’
বিদেশে দেশবিরোধী প্রচারণা নিয়ে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বিএনপির পেইড এজেন্টরা নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। কদিন আগে গুজব ছড়িয়েছিল যে, ব্যাংকে টাকা নাই। এ জন্য সবাই হুড়মুড় করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেলার হিড়িক শুরু হয়েছিল।
তিনি বলেন, এই গুজবগুলো সরকারের বিরুদ্ধে নয়, বিএনপি এবং তাদের পেইড এজেন্টরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। তবে এতে তাদের কোন লাভ হচ্ছে না। আমরা গুজব নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।
বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে গোলযোগ নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যেখানে সমাবেশ করে সেখানে নিজেরাই মারামারি করে, চট্টগ্রামে দুই গ্রুপ মারামারি করেছে, মারামারি করে ওদের পার্টির অফিস ভাঙচুর করেছে, বিভিন্ন জায়গায় এ সমস্ত ঘটনা ঘটছে।
‘আর যে সমাবেশগুলোর মাধ্যমে তারা সরকারকে টেনে নামানোর কথা বলছে, সরকারের পদত্যাগ চাওয়া হচ্ছে, সেখানে সরকার সমস্ত নিরাপত্তা বিধান করছে, যাতে তাদের সমাবেশে কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। কিন্তু মাঝে মধ্যে তারাই পুলিশের ওপর চড়াও হয়।’
জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব ও কনফেডারেশনের সভাপতি সাদেক সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর অপু ছাড়াও নেতাদের মধ্যে ইফতেখার আলী, সালাম চৌধুরী প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সাদেক সিদ্দিকী কনফেডারেশনের পক্ষে মন্ত্রীর কাছে ৯ দফা দাবি সম্বলিত একটি পত্র হস্তান্তর করেন।
এফডিসির ক্যামেরা ও লাইট ভাড়ার হার প্রচলিত বাজার অনুযায়ী পুণনির্ধারণ, সেন্সর বোর্ডসহ বিভিন্ন কমিটিতে কনফেডারেশনের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তি, জাতীয় পুরস্কারে প্রোডাকশন, লাইট ডিজাইনারদের অন্তর্ভুক্তি, শুটিং ইউনিটের গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচলের দাবিগুলো মন্ত্রী বিবেচনায় নেয়ার আশ্বাস দেন।