জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চলছে ১২তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ।
আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টা ৬ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন— অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আজ ১৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিচ্ছেন সিআইডির ফরেনসিক শাখার আলোকচিত্র বিশেষজ্ঞ ওমর ফারুক খান। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে জেরা করবেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
ট্রাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ। সঙ্গে রয়েছেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার ও সাইমুম রেজা তালুকদার।
গতকাল বুধবার এ মামলায় ১১তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ৯ অক্টোবর দশম দিনে সাক্ষ্য দেন শহীদ ওমর ফারুকের বাবা চান মিয়া। ১৪তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দিতে গত বছরের ৫ আগস্টের বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি। পরে তাকে জেরা করেন পলাতক আট আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন— ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। তবে সাবেক এমপি সাইফুলসহ আটজন এখনও পলাতক রয়েছেন।
গত ২ জুলাই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে অন্যান্য তথ্যসূত্র হিসেবে ৩১৩ পৃষ্ঠা, সাক্ষী ৬২, দালিলিক প্রমাণাদি ১৬৮ পৃষ্ঠা ও দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত করা হয়। পরে এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ছয় তরুণ। এরপর পুলিশ ভ্যানে তাদের লাশ তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নৃশংস এ ঘটনার সময় একজন জীবিত ছিলেন। কিন্তু তাকেও বাঁচতে দেননি তারা। পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত মানুষকেই পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়।