নওগার সাপাহার উপজেলা সদরে অবস্থিত সততা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম নামের একটি ক্লিনিক। ক্লিনিকটিতে সিজারিয়ান অপারেশনসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা দেয়া হয়। হাতের কাছেই একটি ক্লিনিক থাকায় আশপাশের মানুষ ছিলেন খানিকটা চিন্তামুক্ত। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্তত জেলা শহর পর্যন্ত যাওয়ার আগেই সেবা পাওয়া যাবে। তবে চিকিৎসা সেবার নামে ক্লিনিকটিতে চলছিল ভয়াবহ কর্মকাণ্ড।
ক্লিনিকটিতে যাবতীয় অপারেশন ও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে মনিরুল ইসলাম স্বপন নামের চিকিৎসক পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি। তবে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্যে সকলের চক্ষু ছানাবড়া। অষ্টম শ্রেণি পাস করে আর লেখাপড়া করেননি তিনি। তারপরও চিকিৎসকের ভূমিকায় দীর্ঘদিন অস্ত্রোপচার করে চলেছেন।
শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটি ক্লিনিক হিসেবে নিবন্ধনই করেননি তিনি। অপারেশন থিয়েটারের অবস্থাও তথৈবচ। তারপরও এই ক্লিনিকে রোগী নিয়ে ছুটে আসতেন স্বজনরা।
শুক্রবার ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে উঠে এসেছে ভয়াবহ এসব তথ্য। পরে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দিয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুনের পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত। সেইসঙ্গে চিকিৎসক পরিচয়দানকারী মনিরুল ইসলাম স্বপনকে আটক করে একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৭ দিন কারাদণ্ড বর্ধিত করে তাকে থানায় নেয়া হয়।
অভিযান শেষে ইউএনও আব্দুল্যাহ আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, সাপাহার উপজেলার তিলনা রোডের সরফতুল্ল্যাহ মাদ্রাসার সামনে সততা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন ক্লিনিকের পরিচালক ও ‘চিকিৎসক’ পরিচয়দানকারী মনিরুল ইসলাম স্বপন। কিন্তু ক্লিনিকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অপারেশন থিয়েটারের ফিটনেস দেখাতে পারেননি তিনি। তাছাড়া চিকিৎসক হিসেবে তার যোগ্যতা যাচাইয়ে দেখা যায় তিনি ডাক্তারই নন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন তিনি। তাই ক্লিনিকটি বন্ধ করে তাকে কারা ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অভিযানের সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন জাহান লুনা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ রুহুল আমিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।