বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কিট সংকটে বন্ধ ডেঙ্গু পরীক্ষা

  • প্রতিনিধি, ফেনী   
  • ২২ আগস্ট, ২০২৩ ২৩:৩৭

কিট না থাকায় সোনাগাজীর রোগীরা জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য গিয়েও ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে জেলা শহরের হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে ছুটছেন।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। কিট সংকটের কারণে গত দুই দিন ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এতে চরম ভোগান্তি আর আতঙ্কে দিন পার করতে হচ্ছে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের।

গত ৭ জুলাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে উপজেলায় মিজানুর রহমান নামে পৌরসভার এক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ৩২৪ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষায় ১০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আগস্ট মাসেই রোববার পর্যন্ত ১৬০ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষায় ৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।

গত বছর উপজেলায় ৮৬ জনের পরীক্ষায় মাত্র ৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। তবে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে আরও বেশি বেশি পরীক্ষার সঙ্গে ডেঙ্গুও শনাক্ত হয়েছে। সোমবার হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও জরুরি বিভাগ থেকে অন্তত ৫৯৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় তিনশ’ রোগীর জ্বর, শরীর ব্যথা, সর্দি-কাশি ও বমি ছিল।

স্থানীয়রা জানান, গত দুই মাস ধরে উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ মাংসপেশিতে ব্যথা নিয়ে প্রতিনিয়ত শত শত রোগী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতদিন ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট থাকলেও রোববার থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ পৌর শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট সংকট দেখা দেয়। এতে রোগীরা জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ও ক্লিনিকে পরীক্ষার জন্য গিয়েও ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে জেলা শহরের হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে ছুটছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে জ্বরে আক্রান্ত তিন বছরের মেয়ে ইসমাত জাহানকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে যান পৌরসভার তুলাতলী এলাকার বাসিন্দা তাসলিমা আক্তার। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, ডেঙ্গু পরীক্ষা হবে না। কারণ, কিট নেই।

তিনি বলেন, ‘পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। পরীক্ষা করতে না পারায় মেয়ের জ্বর নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’

উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের চর চান্দিয়া এলাকার বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, ‘চার দিন ধরে আমার প্রচণ্ড জ্বর। একইসঙ্গে শরীরে ব্যথা ও বমি হচ্ছে। উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে পারিনি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’

সোনাগাজী ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. মো. নুর উল্যাহ বলেন, ‘গত দুই মাসে আমার ক্লিনিকে জ্বর নিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে প্রায় দুই শতাধিক লোকের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে চার নারীসহ ১৫ জনের রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তারা ঢাকা-চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করছেন।

‘তবে গত কয়েকদিন ধরে ক্লিনিকেও ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের সংকট দেখা দিয়েছে। এজন্য গত তিনদিন পরীক্ষা বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ঢাকা থেকে ৫ শ’ কিট এসে পৌঁছানোর কথা। কিট আসলে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে সমস্যা হবে না।’

পৌর শহরের বাসিন্দারা বলছেন, ‘পৌর শহরের ড্রেন ও নালাগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। সর্বত্র ময়লার ভাগাড় বললেই চলে। এ কারণে পৌরসভা এলাকায় মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। রাতে ও দিনে মশারী বা মশার কয়েল ছাড়া বিশ্রাম ও ঘুমানো যায় না। মশার উপদ্রব দমনে পৌর কর্তৃপক্ষ ক্র্যাশ প্রোগ্রামসহ কোনো ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ না করায় দিন দিন মশার উপদ্রব বেড়ে চলেছে। এতে ডেঙ্গুর শঙ্কায় রয়েছেন শহরের বাসিন্দারা।’

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উৎপল দাশ বলেন, ‘হাসপাতালে দুই হাজার কিট সরবরাহের জন্য চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। কিট সঙ্কেটের কারণে আগত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর