বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আন্দোলন থামাতে আমেরিকা থেকে লোক ভাড়া করেছে আওয়ামী লীগ: ফখরুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৩১ জুলাই, ২০২৩ ১৮:২৪

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি। শরিক দলগুলো সঙ্গে আলোচনা করে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। অত্যাচার বন্ধ না করলে জনগণ  প্রতিহত করবে। সোজা পথে না এলে রাজপথে ফয়সালা হবে।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের আন্দোলন থামাতে আমেরিকা থেকে লোক ভাড়া করে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, ‘কয়েকটা লোককে ভাড়া করে এনে তারা কি আমাদের আন্দোলন থামাতে পেরেছে? পারেনি।’

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সোমবার বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা না দিয়েই বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি। এই শান্তির মাধ্যমে আমরা বিজয়যাত্রা আনব। আমরা আমাদের শরিক দলগুলো সঙ্গে আলোচনা করে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।

‘সরকারকে আহ্বান জানাবো, আমাদের বাধা দেবেন না। অত্যাচার বন্ধ না করলে জনগণ প্রতিহত করবে। সোজা পথে না এলে রাজপথে ফয়সালা হবে।’

‘এই সরকারের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা-তল্লাশি চালানো হয়েছে। এসব করেও আমাদেরকে গত ১৫ বছর আমাদেরকে আটকানো যায়নি। এগুলো করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে মানুষের ঢল থামানো যাবে না।’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সোমবার বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে আগত নেতাকর্মী-সমর্থকদের একাংশ। ছবি: নিউজবাংলা

সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গয়েশ্বর রায় ও আমান উল্লাহ আমানকে নিয়ে তোমরা যে নাটক করেছ সেই নাটকে ওনারা ছোট হননি, ছোট হয়েছো তোমরাই (সরকার)।’

ফখরুল বলেন, ‘সরকার পাঁচটা লোককে বিদেশ থেকে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। তার মধ্যে একটা নাকি আমেরিকার। যার নামও কেউ কোনোদিন শোনেনি। সে আবার ইলেকশন কমিশনে গিয়ে বক্তৃতা করে আর প্রেসকে বলে- এখানে কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট সিস্টেম চলবে না।

‘বারে বাহ! তুমি কে ভাই? হু আর ইউ! এদেরকে কেউ চেনে না। টাকা দিয়ে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। এদেরকে গতবারও নিয়ে আসা হয়েছিল। যে ফোরামের হয়ে তারা এসেছে সেই ফোরাম এবং সেটার প্রতিষ্ঠাতা যে আবেদ তাকেও দেশের মানুষ কেউ চেনে না।’

‘ক্ষমতাসীনরা এ ধরনের ভাঁওতাবাজি করে মানুষকে বোকা বানাতে চায়। সরকারের পায়ের নিচের মাটি কত দুর্বল হলে এ ধরনের নাটক মঞ্চস্থ করা যেতে পারে!’

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ নির্ধারণ করে ফেলেছে নির্বাচন কীভাবে হবে। আমরা শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন চাই না। বিরোধী সব দল মিলে একটা ঐক্য তৈরি হয়েছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়।

সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান...। এবার আর ধান খাওয়া হবে না। বাংলার মানুষ বুঝে গেছে। এবার আর সম্ভব হবে না। এক দফা দাবিতে দেশের মানুষ একসঙ্গে জেগে উঠেছে।’

সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নাকি আপনাদের ভয় না পেতে বলেছেন? অন্যায় না করলে ভয় কিসের? আমরা কর্মকর্তাদের বলতে চাই, জনগণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবেন না, গ্রেপ্তার বন্ধ করুন।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে ২৮ জুলাই আয়োজিত বিএনপির মহাসমাবেশে ৫০ লাখ লোকের উপস্থিতি হয়েছে দাবি করে মহাসচিব বলেন, ‘সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে শিগগির সরকার পতনের আন্দোলন ঘোষণা হবে।’

জনগণ সিদ্ধান্ত দিয়েছে আন্দোলনের নেতা তারেক রহমান: আমির খসরু

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আজকের সমাবেশ কোনো আন্দোলন কর্মসূচি নয়। এটা প্রতিবাদ সভা। মহাসচিব সময়মতো আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। সেই প্রস্তুতি আমাদের আছে। নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু নেই। আন্দোলন চলছে। শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখতে পারবেন না- পুলিশের পক্ষ থেকে এই শর্তের বিষয়ে খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবেন সেটা বিচার বিভাগ বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সিদ্ধান্তে নয়। বাংলাদেশের নেতা কে হবেন সে সিদ্ধান্ত দেবে দেশের জনগণ। ২৮ তারিখে লাখ লাখ মানুষ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন- আন্দোলনের নেতা হলেন তারেক রহমান। আর জনপ্রিয় নেত্রী হলেন খালেদা জিয়া।

‘আমরা আগামী দিনে রাস্তায় থাকব। বাধাগ্রস্ত হলে প্রয়োজনে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করব।’

ফল পাঠানো আর খাওয়ানো নাটক: নজরুল ইসলাম

বিএনপির জা স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফল পাঠানো আর খাওয়ানো এটা নাটক। নাটক না হলে টিভিতে দেখানোর দরকার কী বা ভিডিও ছাড়ার দরকার কী?’

সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এটা দিয়ে আপনারা মানবিক এটা বুঝাতে চান? আপনারা মানবিক হলে আমাদের কিছু নেতাকে খাওয়াবেন আর অনেককে পেটাতেন না। অনেকের হাত-পা ভেঙে দিতেন না। আপনারা মানবিক না, আপনারা নাটকবাজ।’

আওয়ামী লীগ দেশে স্বৈরতন্ত্র এনেছে: মঈন খান

স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে শেখা হাসিনার সরকার। এই সরকার লগি-বৈঠার সরকার। তারা বলে যে দেশে গণতন্ত্র এনেছে। অথচ তারা দেশে এনেছে স্বৈরতন্ত্র।

‘এই সরকার আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা দিয়েছে। অথচ আমরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দেইনি। এই সরকার আমাদের মহাসচিবের বিরুদ্ধে ৮৭টি মামলা দিয়েছে। অথচ আমরা তাদের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দেইনি। অনেক হয়েছে, আর না। এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’

বিএনপির সমাবেশ দেখে আওয়ামী গোষ্ঠীর মাথা খারাপ: আব্বাস

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘২৮ তারিখে আমাদের এতো বড় সমাবেশ দেখে আওয়ামী গোষ্ঠীর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে। আমরা পাকিস্তান আমলে আইয়ুব-ইয়াহিয়ার অত্যাচার দেখেছি। কিন্তু এই সরকারের মতো কোনো সরকারকে অত্যাচার করতে দেখিনি। আমাদের গয়েশ্বর রায়কে সাপের মতো পেটানো হয়েছে। সাপকেও মানুষ এভাবে মারে না।’

তিনি বলেন, ‘এই দেশ কারও কাছে ইজারা দেয়া হয়নি। আমাদের সবাইকে মেরে ফেললেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন বন্ধ হবে না। জনগণ আওয়ামী লীগের পতন ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করছে না। ফেরাউন-নমরুদ কেউ টিকে থাকতে পারেনি। শেখ হাসিনাও পারবেন না।’

আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে সমাবেশ করব: আব্দুস সালাম

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘তারেক রহমান একটি বক্তব্য দিয়েছেন এতেই তাদের মাথা খারাপ। আর তারা বলে যে তারেক রহমানের সঙ্গে কেউ নেই। যদি না-ই থাকে তাহলে আইন করে বক্তব্য প্রচার বন্ধ করা কেন?

‘আমরা এখন ধৈর্য ধরছি। মার খাচ্ছি। আগামীতে চ্যালেঞ্জ দিয়ে যখন আপনাদের সঙ্গে মারামারি করব তখন আওয়ামী লীগের অফিসের সামনেই আমরা সমাবেশ করব।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হলো ভুয়া। আর তাদের সঙ্গে যারা আছে তারাও ভুয়া। কোনোভাবেই এই সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে জনসমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য আমিরুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

এ বিভাগের আরো খবর