কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রভাষক পদে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে অশোভন আচরণের অভিযোগে এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে লিখিত আকারে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সূত্র শনিবার এ তথ্য জনায়।
এর আগে ড. বখতিয়ার হাসানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বোর্ডে অশোভন আচরণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নিয়োগ বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বোর্ডের সদস্য হিসেবে অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান অধ্যাপক ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামানের সঙ্গে অযৌক্তিক ও অশোভন আচরণ করেন।
ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামানের অভিযোগ, ড. বখতিয়ার অভিযোগকারীসহ নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নকারী অন্য সদস্যদের বিভিন্নভাবে অবমূল্যায়ন ও অবজ্ঞা করে তাদের অপমান করেছেন।
কামরুজ্জামান বলেন, ‘বোর্ডের সভাপতি ও উপ-উপাচার্য যখন ট্যাবুলেশনে লিখিত, অ্যাকাডেমিক ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর একত্রিত করছিলেন, তখন অভিযুক্ত বখতিয়ার হাসান তা অনাস্থা, অবিশ্বাস ও আদবের বরখেলাপ ঘটিয়ে সন্দেহের চোখে অশোভনভাবে পর্যাবেক্ষণ করেছিলেন, যা চূড়ান্ত বিবেচনায় একটি অশোভন আচরণ।
‘নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা যখন পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রভৃতি স্থান নির্ধারণ করে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানধারীকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ সুপারিশের জন্য মতামত প্রদান করেন, তখন অভিযুক্ত বখতিয়ার হাসান মেধা তালিকার শীর্ষ অবস্থানকারীদের বাদ দিয়ে তৃতীয় স্থানধারীকে নিয়োগ সুপারিশের জন্য জোর করতে থাকেন।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘বখতিয়ার হাসান নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রায় বিভিন্ন স্তরে (যেমন: প্রশ্ন করা, খাতা দেখা, মৌখিক পরীক্ষা নেয়া, পরীক্ষার ফলাফল তৈরি) উপস্থিত থেকে স্বাক্ষর প্রদান করলেও চূড়ান্ত নিয়োগ সুপারিশের কাগজে স্বাক্ষর না করে কিংবা কোনো প্রকার ভিন্নমত না দিয়ে সভা থেকে অশোভনভাবে বেরিয়ে যান।’
কামরুজ্জামান জানান, ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর ২৫৬তম সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সিন্ডিকেটে ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর ঘটনার সত্যতা খতিয়ে দেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি ‘ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং’ কমিটি গঠন করে।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, ‘এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তিনি যে অযৌক্তিক ও অশোভন আচরণের অভিযোগ করেছেন, তেমনটি কিছুই ঘটেনি। আশা করছি প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’
অভিযোগকারী অধ্যাপক ড. আবু সাদেক কামরুজ্জামান বলেন, ‘এটা অনেক আগের বিষয়। সে সময় একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম।’