ঘোষণার ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কথা জানায় জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। দুই দফা দাবিতে বুধবার সকাল থেকে এই পরিবহন ধর্মঘট শুরু হওয়ার কথা ছিলো।
সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসক আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’
এর আগে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বৈঠক করে সিলেট-তামাবিল সড়কে নির্বিঘ্নে বাস চলাচল করতে দেয়া এবং জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামাল আহমেদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে পুরো সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতির ডাক দেয় জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
বিকেলে সংগঠনটির সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দাবিতে দু’দিন ধরে সিলেট-তামাবিল সড়কে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় বুধবার ভোর থেকে পুরো সিলেট জেলায় পরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে সব পরিবহন সংগঠন। তাই বুধবার থেকে সিলেটের কোনো রাস্তায় কোনো ধরনের গাড়ি চলবে না।’
পরিবহন শ্রমিক সংগঠন সূত্র জানায়, শুক্রবার (৭ জুলাই) রাতে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় বাস-ইজিবাইক সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহত্তর জৈন্তার ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির ডাকা সভায় সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন বাসচালকদের ছাঁটাই ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবি জানানো হয়।
শনিবার জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে চলাচলকারী বাসের চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করেন। এ সময় লাইসেন্সবিহীন চালকদের গাড়ি আটকে দেন তারা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রোববার রাতে সিলেট-তামাবিল সড়কে ধর্মঘটের ডাক দেয় সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। সোমবার সকালে এই ধর্মঘট শুরু হয়। এতে দু’দিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সড়কটিতে চলাচলকারী যাত্রীরা। দু’দিন ধর্মঘট পালনের পর মঙ্গলবার পুরো জেলায় পরিবহন চলাচল বন্ধের ডাক দেয়া হয়।
পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি আহ্বানের পর রাতে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান নিজ কার্যালয়ে শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর ‘পরিবহন ধর্মঘট’ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাদের দাবিগুলো আমি শুনেছি। সেসব যাছাই-বাছাই করে বিবেচনা করা হবে।’