রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ আয়োজনের জন্য ২৩টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এসব শর্ত প্রতিপালনসাপেক্ষে দলটিকে বুধবার তিন ঘণ্টার জন্য সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, সমাবেশের স্থান ব্যবহারের জন্য পৃথকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
বিএনপির পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেও ঢাকায় শান্তি সমাবেশ আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের পক্ষে তার বিশেষ সহকারী সৈয়দ মামুন মোস্তফা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই অনুমতি দেয়া হয়।
রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ৮ জুলাই ডিএমপি কমিশনারের কাছে আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশ আয়োজনের এই অনুমতি দেয়া হয়।
ডিএমপির দেয়া ২৩ শর্ত
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়। স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পৃথকভাবে অনুমোদন নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. অনুমোদিত স্থানেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের চারদিকে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. সমাবেশস্থলে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৮. শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। কোনোক্রমেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
৯. অনুমোদিত স্থানের বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
১০. অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
১১. আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১২. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৩. সমাবেশের কার্যক্রম ব্যতীত মঞ্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
১৪. সমাবেশ শুরুর ২ ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৫. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা) সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৬. কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭. আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৮. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেয়া যাবে না।
১৯. উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য দেয়া বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২০. কোনো ধরনের লাঠি-সোঁটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না। ২১. আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
২২. উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৩. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিলের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।