বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কিশোরগঞ্জে পুকুরে জেলা আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ

  • প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ   
  • ৯ জুলাই, ২০২৩ ১১:২৪

জাহাঙ্গীর আলম নামে ব্যাপারি বাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা জানান, বাদল রহমান তার দীর্ঘদিনের পরিচিত মানুষ। তার সঙ্গে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা হলেও যেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে, সে এলাকায় তাকে কোনোদিন আসতে দেখেননি। 

কিশোরগঞ্জ শহরের একটি পুকুর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি বাদল রহমানের (৬২) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পরিবারের অভিযোগ, বাদলকে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে রাখা হয়েছে।

শহরের চরশোলাকিয়া এলাকার ব্যাপারি বাড়ির পুকুরে রোববার সকাল ৯টার দিকে বাদলের মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।

বাদল রহমান কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের ধীরুয়াইল এলাকার মুখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ শহরে থাকতেন।

বাদল রহমানের বড় ভাই আতাউর রহমান মিলন জানান, শনিবার রাত আটটার দিকে বাদল বাসা থেকে হাঁটতে বের হয়ে আর ফেরেননি। রোববার সকালে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

মিলনের দাবি, তার ভাইকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে রাখা হয়েছে।

২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে বাদল রহমানের প্রথম স্ত্রী লুৎফা বেগম মারা যান। পরিবারে তার দুই ছেলে রয়েছে।

২০২৩ সালের ৩ মে ঢাকার ওয়ারী এলাকায় আয়েশা আহমেদ নামে এক নারীকে বিয়ে করেন বাদল। ১৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে কিশোরগঞ্জে নিয়ে আসেন। বিয়ের পরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে খড়মপট্টির বকুলতলায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।

বাদল রহমানের স্ত্রী আয়েশা আহমেদ জানান, গতকাল রাতে তিনি বাসা থেকে হাঁটতে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। ফিরতে দেরি হওয়ায় তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার সাথে এ বিষয়ে তিনি কোনো কিছু শেয়ার করেননি।’

স্বজনরা জানান, যেখান থেকে বাদল রহমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেদিকে তিনি কখনও হাঁটতে যেতেন না।

জাহাঙ্গীর আলম নামে ব্যাপারি বাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা জানান, বাদল রহমান তার দীর্ঘদিনের পরিচিত মানুষ। তার সঙ্গে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা হলেও যেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে, সে এলাকায় তাকে কোনোদিন আসতে দেখেননি।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ সুপার রাসেল শেখ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ করে। তার পকেট থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, চশমা পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এতে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাকসুদুর রহমানকে সভাপতি এবং কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার চিকিৎসক আলী আকবর এবং শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক চিকিৎসক ইমতিয়াজকে সদস্য করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আরএমও মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা তিন সদস্যের কমিটির মাধ্যমে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পানিতে ডুবে বাদল রহমানের মৃত্যু হয়েছে। এটা একটা সন্দেহজনক মৃত্যু। তাই ভিসেরা নমুনা মহাখালীতে পাঠানো হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ বলা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিসেরা রিপোর্ট পেতে ১৫ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে, তবে এটা যেন দ্রুত দিয়ে দেয়, এ বিষয়ে আমরা অনুরোধ করব।’

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজে রাত ৯টা ১৬ মিনিটে সর্বশেষ বাদল রহমানকে কানিকাটা এলাকার দিকে যেতে দেখা গেছে। আরও সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর